শেষের শুরু

687 3 0
                                    

আগের একটি লেখাতে ইসাবেলার সাথে যে মিসিসাগায় লিভ টুগেদার নিয়ে বলেছিলাম। কারন মূলত অর্থনৈতিক, একজনের চেয়ে দুজনের উপার্জনে কম্ফোর্ট বেশী। সব ভালো জিনিশই একদিন শেষ হয়ে যায়। বেলার বড় বোন কারমেন এসে ঘুরে যাওয়ার পর আমাদের সম্পর্ক বেশ কিছু দুর্ভাগ্যজনক মোড় নিল। আমারও দোষ ছিল। আমি চাকরী ছেড়ে ইউঅফটিতে আবার গ্র‍্যাড স্কুলে ঢুকেছিলাম, এবার অন্তত পাচবছরের মামলা। আসলে চাকরীতে ঠিক মন বসছিল না, কেউ চাকরী করে বাসার প্রয়োজনে, কেউ করে সংসার পাতবে বলে, কেউ ক্যারিয়ার গড়তে, এগুলোর কোনটাই আমার প্রয়োজনের তালিকায় না থাকায় ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়াটাই যুক্তিসঙ্গত মনে হচ্ছিল। বিশেষ করে ঢাকা থেকে আব্বা আম্মা খুব চাপ দিচ্ছিল। বেলা বাঙালী না হলেও তার মনোভাব আর দশটা মেয়ের মতই, পুরুষ লোকের অনেক অপরাধ মেয়েরা মেনে নেয়, পরকিয়াও ক্ষমা করে, কিন্তু মাস শেষে পে চেক ঘরে না আনলে তাদের মাথা গরম হয়ে যায়। আমি সেটা কিছুদিনেই বুঝেছি, তবু শেষ চেষ্টা হিসেবে রিলেশনশীপ রিকিন্ডলের নানা কসরৎ করে যাচ্ছিলাম। এই মেয়েই দুবছর আগে ক্যাম্পাস পাগল ছিল, আমাকে টেনে হিচড়ে পার্টিতে নিয়ে যেত আলবার্টায় থাকতে, আর এখন ইউনি ক্যাম্পাস সংক্রান্ত কোন কিছু সহ্য করতে পারে না। পচিশ পেরোলে মেয়েদের যা হয় আর কি। ওর জন্য আমিও ক্যাম্পাসে মিনিমাম সময় দিতে বাধ্য হতাম। তবু কি ভেবে বাঙালী স্টুডেন্টদের গেট টুগেদারে ওকে সেদিন নিয়ে গিয়েছিলাম।

টরোন্টোতে এসে আমি সচরাচর বাংলাদেশী এড়িয়ে চলি। বিশেষ করে যারা অনেকদিন ধরে আছে তাদেরকে তো মহাভয় পাই। এরা হয়েছে না ঘড়কা না ঘাটকা। গত কয়েক বছরে এই গ্রুপটার মধ্যে মোল্লাবাজী এমন জেঁকে বসেছে, মুফতী আমিনিও এদেরকে দেখলে লজ্জা পাবে। এরা আর এদের কানাডায় জন্মগ্রহন করা ছেলেমেয়েগুলো এমন ভয়াবহ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগছে যে আমার কাছে মনে হয় এটা যাস্ট সময়ের ব্যাপার এদের মধ্য থেকে হাফ ডজন আত্মঘাতি বোমাবাজ ধরা পড়বে। আর যে পাকিস্তান প্রেম এদের মধ্যে, ঢাকার ঘাগু বিএনপি জামাত সাপোর্টারও বিশ্বাস করতে চাইবে না। এইগ্রুপই টাকা পয়সা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর খুনী নুর চৌধুরীকে আগলে রেখেছে। সেদিক থেকে ইউঅফটির স্টুডেন্ট গ্রুপ পুরোই অন্যরকম। মেইনলী গত কয়েকবছরে ঢাকা থেকে আসা ছেলেপেলে, ওপেন মাইন্ডেড, বাংলাদেশ যে প্রবাসী কূপমন্ডুকগুলোকে পিছনে ফেলে মানসিকতায় কত এগিয়ে যাচ্ছে ওদের দেখলে বোঝা যায়, বেলাকে নিয়ে যাওয়া যেজন্য নিরাপদ। বেলাও সালোয়ার কামিজে এমনভাবে গিয়েছিল, যারা চিনে না ওরা ভেবেছে ঢাকারই কেউ, কেবল গড়পড়তার চেয়ে একটু বেশী ফর্সা।

তানিম সিরিজ (১৮+)Onde as histórias ganham vida. Descobre agora