যাত্রাজয়

13 2 0
                                    

      "ইউ নো ইটস এন অফুল ফিলিং টু লাভ সামওয়ান সো মাচ দ্যাট ইউ এবসুলিউটলি হেট দেম ফর লিভিং ইউ। দে হ্যাভ আ গ্রেট ইমপ্যাক্ট ইন ইয়োর এক্সিসটেন্স। অক্টোবরে যেমনটা ভালবাসতাম, এই কাঠপোড়া এপ্রিলে তার থেকে কোন অংশেই কম বাসি না। দিনকে দিন ভালবাসাটা বেড়েছে। ভালবাসাটা ওজন করে মাপা যায়না বুঝলে তো..." কথাটা শুনে সম্মোহন ভাবটা কাটিয়ে হতচকিয়ে গেল ললিতা। মনে মনে ভাবছে কি অসম্ভব এক প্রেমিকের সঙ্গ পেয়েছে সে।

       পুরো নাম ললিতা চ্যাটার্জী। কলকাতার কালীঘাটে সর্দার শংকর রোডে যে চারূচন্দ্র কলেজটা আছে তার উল্টোদিকের কলোনীর সাত নম্বর বাড়িটা ওদের। ওদের কলোনীর প্রায় প্রতিটি বাড়িই আদি গোছের। দেয়ালগুলো রংচটা, শেওলা পরা, একেবারে পুরদস্তুর পশ্চিমবঙ্গের বনেদী ঠাকুরবাড়ি। কে জানে ওর ঠাকুরদার ঠাকুরদা-এর স্মৃতি ধরে রাখতেই হয়তো বাড়িটা ভেঙ্গে নতুন করে গড়ায়নি। বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে হারে স্ট্রীটের উল্টোদিকের মিলেনিয়াম পার্কের গোড়ায় আমাকে পিক আপ করতে এসেছে।

      এর আগে কখনোটি আমার দেশের বাইরে আসা হয়নি। জেটি থেকে নেমেই সে এক মহা হূলস্থুল কান্ড কারখানা। সকলেই এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে, লালজামা আর ধুতি পরে কুলিরা মালামাল নিয়ে দৌড়ঝাপ করছে। জেটি অফিসের দেয়াল সংলগ্ন হয়ে বসে আছে শ'খানেক ভিখিরি। মায়া লাগলো তাদের জন্য। চেহারা বেশভূষা একেবারে আমার দেশের ভিখিরিদের মত। বোধ করি এজন্যই মায়া কাজ করছে বেশি। পকেট থেকে এক টাকার পয়সা বের করে দিতে গিয়ে মাথায় এলো কাকে রেখে কার বাটিতে দেবো। আর বিদেশে তো ধর্মকর্ম করতে আসিনি।

       জাহাজ নোঙ্গরের খানিকদূরে একজন চাওয়ালাকে দেখা গেল। উচুমতন এক টুকরিতে চা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। খুব লোভ জাগলো। কলকাতার বিখ্যাত মটকা চা। দাম শুনলাম পাঁচ টাকা। হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে সুররত করে একটা চুমুক দিলাম। আহা খাসা! চায়ের স্বাদ বাংলাদেশ থেকে আহামরি তফাৎ না। শুধু অতিরিক্ত দুই একটা মশলা দিয়েছে। এই রীতি অনুসরণ করে ওপারের রবীন্দ্র সরোবরেও মটকা চা বিক্রি শুরু করেছিল। পঁচিশ টাকা!

You've reached the end of published parts.

⏰ Last updated: Sep 05, 2022 ⏰

Add this story to your Library to get notified about new parts!

জার্নি টু দ্যা ওয়েস্ট কলোনীWhere stories live. Discover now