সুখপূর্ণ

103 2 1
                                    

ঘটনাটি ঘটে আমার বড়ভাইয়ের মৃত্যুর একসপ্তাহ পরে। বাবা-মা, আমরা দুই ভাই ও ভাবী, এই তিনজনকে নিয়েই আমাদের পরিবার। আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারের বড় ছেলে ছিল আমার ভাই। নাম ছিল আবিদ হোসেন। ভাইয়ের বিয়ে হয়েছিল তার মৃত্যুর চারমাস পূর্বে। 

ইশা মনি, আমার ভাবী। বয়স ২৬। যেমনি তার গায়ের রঙ, তেমনি চেহারা ও তেমনি দেহসৌষ্ঠব! কেউ দেখলে বিশ্বাসই করতে চায় যে তিনি বিবাহিত। আমি ভাবীকে খুবই পছন্দ করি। অত্যন্ত সম্মানও করি। কারণ তিনি আমাকে খুব সাপোর্ট করেন। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি একদম ভেঙে চুরমার হয়ে গেছেন। গত একসপ্তাহ যাবত তাই-ই দেখছি। ঠিকমত খাচ্ছেন না, ঘুমাচ্ছেন না ইত্যাদি। 

আজ আমার ভাইয়ের মৃত্যুর সপ্তমদিন, শনিবার। জোহরের নামাজ পড়ে বাসায় এসেই দেখলাম ভাবীর রুম ফাঁকা। তিনি বাসায় নেই। দ্রুত রান্নাঘরে ঢুকলাম। দেখি মা রান্নাবান্নায় ব্যস্ত। জিজ্ঞেস করলাম, "মা, ভাবী কই?"

"ওর এক বান্ধবীর বাসায় গেছে। সন্ধ্যার আগেই চলে আসবে।" জবাব দিলেন মা। "মেয়েটার উপর দিয়ে যা যাচ্ছে...এমন সময় একটু বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করলে ভালো লাগবে।"

আমি আমার রুমে ফিরে এলাম। দরজা ভিড়িয়ে বিছানায় গা এলিয়ে ফেসবুক স্ক্রল করছি, তখনি একটা চশমা বেচা-কেনার পেইজে একটা পোস্ট দেখে লাফ দিয়ে বসলাম। 

আমার অতি আকাঙ্খার চশমাটা মোবাইল স্ক্রিনে দেখতে পাচ্ছি আমি। কালো রঙের চশমা। দু'পাশে গুচি ব্রান্ডের লোগোর ডিজাইন, অসাধারণ! কিন্তু দাম দেখামাত্র মনটা ভেঙে গেল। ২ হাজার টাকা!

বিছানায় পুনরায় শুতে যাবো তখনি আমার এক বন্ধুর বলা এক উক্তি মনে পড়লো।

"দোস্ত, দুনিয়ার সব ব্রান্ডের মাল গুলিস্তানে পাবিই পাবি। কোনো সন্দেহ নাই। আর দাম? অর্ধেক অর্ধেক..." তার কথাগুলো মনে পড়ায় ইচ্ছে হলো যাই একটু গুলিস্তানে ট্রাই মেরে দেখি।

যেই ভাবা সেই কাজ, দ্রুত টি-শার্টটা গা চাপিয়েই বেরিয়ে পড়লাম।

•••

কোনোমতে লেগুনা থেকে নেমে নিঃশ্বাস ফেললাম। ভেতরে বসে দমবন্ধ হয়ে আসছিল। আর মিনিট পাঁচেকের মধ্যে বেরুতে না পারলে কোনো এক অঘটন ঘটে যেত নিশ্চিত। 

সুখপূর্ণ Where stories live. Discover now