এগারো।শেষের আগে।

437 13 0
                                    

দুপুর ৩.১৫।

হঠাৎ ফোনটা বেজে অঠে।অচেনা নম্বর।
-হ্যালো আসসালামুয়ালাইকুম।
-ওয়ালাইকুমাসসালাম।
-কে বলছেন?
-এটা কি রাফসানের নম্বর?
-জ্বি।
-আপনিই রাফসান?
-জ্বি।আপনি কে?
-আমি সালমান এফ রহমান।সায়মার বাবা।
আমি অবাক।এই লোক আমার নম্বর পাইল কই?
-ওহ সরি আঙ্কেল।আপনাকে চিনতে পারি নাই।
-কোন ব্যাপার না।সায়মাকে দাও।
আমি অবাক।
–জ্বি?
-বললাম সায়মাকে দাও।বাংলা ভাষাতেই তো বললাম। বুঝতে পার নাই।
-জ্বি, বুঝতে পেরেছি।কিন্তু সমস্যা হল সায়মা এখানে নাই।
-তাই?
-জ্বি?
-তোমার এই কথা আমাকে বিশ্বাস করতে হবে?
-ইচ্ছা হলে করেন, নাহলে নাই।
-দেখো ছেলে, বেয়াদবী করবা না।
-বেয়াদবী কই করলাম? আপনি প্রশ্ন করলেন আর আমি জবাব দিলাম।ব্যস।
-দেখো ছেলে তোমার কোন ধারণা আমি কে আর আমার ক্ষমতা কদ্দূর সে সম্পর্কে।সায়মা ঘর ছেড়ে চলে গেছে।আজকের মধ্যে যদি ও ফিরে না আসে তাহলে তোমাকে আর তোমার পরিবারকে আমি জীবন্ত দাফন করব।
-ঠিক আছে। পারলে কইরেন।বেস্ট অফ লাক।
আমি লাইন কেটে দেই।
আম্মু বলে, কে?
-সায়মার বাপ।
-কি বলল?
-হুমকি দিল।
-কেন?
-সায়মা ঘর ছেড়ে বেড়িয়ে গেছে।
-মানে?
-মানে ওর আব্বু বলছিল আমার সাথে কোন রিলেশন রাখলে ও ঘরে থাকতে পারবে না।তাই ও ঘর থেকে বেরিয়ে গেছে।
-ও কই এখন?
-রাস্তায়।
-সে থাকবে কোথায়?
-এখানে আসতেছে।আমাদের কাছে।
-হোয়াট?
এমন সময় একটা টেক্সী এসে থামে।তার থেকে নেমে আসে শরীফ আর সায়মা।
-ওইতো ওরা এসে গেছে।
আমি আম্মুর সাথে ওদের পরিচিয় করিয়ে দেই।ওরা আম্মুকে সালাম দেয়, আম্মু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
-রাফসান।আম্মু আমাকে ডাকে।এদিকে আসো।
আম্মু আমাকে ওদের থেকে একটু দূরে সরিয়ে নেয়।
-এসব কি?আম্মু রাগী চোখে জানতে চায়।
-এদিকে আব্বু আমাদের রিলেশন মেনে নিবে না, ওদিকে ওর আব্বু মেনে নিবেনা। আমরা কোথায় যাব? বল আম্মু।আমি অসহায়ভাবে বলি।
আম্মু চুপ করে থাকে। আমি সায়মা আর শরীফের কাছে যাই।
-শরীফ। আমি ডাক দেই।
-বল।
-একটা কাজ করতে পারবি?
-বলে দেখ।
-তুই সায়মার ব্যাগটা নিয়ে তোর বাসায় চলে যা।আমি সময় করে ওটা তোর বাসা থেকে নিয়ে আসব।
-কেন?
-কারণ আমরা সবাই এখন হাসপাতালেই থাকব।এখানে এতবড় একটা ব্যাগ নিয়ে সায়মা বসে থাকবে নাকি?
-আচ্ছা।এই বলে শরীফ ব্যাগ নিয়ে নিজের বাসার দিকে রওয়ানা দেয়।
-আঙ্কেলের অবস্থা কিরকম?সায়মা জানতে চায়।
-জ্ঞান ফিরছে।
-তোমরা আঙ্কেলের কাছে না গিয়ে এখানে বসে আছ কেন?
-আব্বুর কাছে ছোট চাচ্চু আছে।
-ও।
-আস।আমি সায়মাকে বলি।
-কোথায়?
-আম্মুর কাছে।
-চল।
আমরা আম্মু কাছে যাই।
-তুমি সায়মা?আম্মু জিজ্ঞেস করে।
-জ্বি।সায়মা জবাব দেয়।
-তুমি রাফসানকে ভালবাস?
-জ্বি।
-গুড।বাসা ছাড়লা কেন?
-আব্বু আমাকে শর্ত দিয়েছিল হয় ঘর নাহয় রাফসান।
-আর তুমি রাফসানকে বেছে নিলা?
-জ্বি।
-তোমার সিদ্ধান্ত নিয়ে তুমি খুশি?
সায়মা অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।
-আমি জানতে চাইছি তোমার কি মনে হয় তুমি ঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছ?
-জ্বি।
-বাহ, ভালই।তোমার বাবা কেন এই রিলেশনে রাজি না কেন?
-আমার কাছে আব্বু কিছু ব্যাখ্যা করে নাই।তবে যদ্দুর বুঝলাম আব্বু আঙ্কেলকে চেনেন। তাই তিনি রাজি না।
আমি অবাক।বলে কি এই মেয়ে?আমার বাপের কারণে তার বাপ এই রিলেশনে রাজি না??? আব্বুও কি ঠিক একই কারণে রাজি না? তার মানে কি তারা পরস্পরকে চেনেন?
আমি বলি,আম্মু এসব কথা পরে বললে হয় না?
আম্মু বলল, না।শুরুতেই সব কিছু পরিষ্কার করে নেয়া উচিত। এতে পরে কোন ঝামেলা হয় না।
-কিন্তু......।আমি কিছু বলতে যাচ্ছিলাম।আম্মু আমাকে থামিয়ে দেয়।
-আমার কথা আমাকে শেষ করতে দাও।
আমি চুপ হয়ে যাই।
-সায়মা।
-জ্বি।
-তোমার আব্বু কি করেন?
-ব্যবসা।
-হুম।নাম কি উনার?
-সালমান এফ রহমান।
-তোমরাতো ব্যাপক ধনী পরিবার।
সায়মা চুপ।
-তুমি কি আমাদের সাথে থাকতে পারবা?
-অবশ্যই।সায়মা জোরের সাথে বলে।
-তোমার কনফিডেন্স দেখে খুশি হলাম ।
এমন সময় আমার ফোন বেজে ওঠে।চাচ্চু।
-হ্যা চাচ্চু বল।
-তোরা উপরে আয়।তোর বাপ তোদের দেখতে চাচ্ছে।
-আব্বুর অবস্থা কিরকম?
-আগের চেয়ে এখন অনেক স্টেবল।
-আমরা আসতেছি।
আমি ফোন কেটে দেই।
-কে?তোর চাচা?আম্মু জানতে চায়।
-হ্যা।
-কি বলল?
-বলল আব্বু আমাদের দেখতে চাচ্ছে।আমাদের উপরে যেতে বলছে।
আমি সায়মার দিকে তাকাই।
আম্মু বলে, সমস্যা নাই। সায়মাও আমাদের সাথে চলুক।

যে কারণে ভালবাসি বলা হয় নাWhere stories live. Discover now