আজ দিনটা সুন্দর। ঝকঝকে আকাশ। সাদা মেঘ গুলো তুলোর মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। এমন দিনে বাসে গাদাগাদি করে অফিসে যেতে ভালো লাগে না। আরিফ হোসেন তাই একটি রিকশা নিলেন।
রিকশা জিনিসটা তার পছন্দের। এর মাঝে মুক্তি মুক্তি ব্যাপার আছে৷ গাড়ি আর বাসে বসলে দম বন্ধ হয়ে আসে। রিকশায় এই সমস্যাটা নেই।
অফিসে ঢুকতেই মাহফুজ সাহেবের সাথে দেখা। তার গায়ে হাল্কা নীল রঙের শার্ট। সাথে সুন্দর একটি টাই। তাকে দেখতে ভাল লাগছে।
তিনি হাসতে হাসতে বললেন, "আরে আরিফ সাহেব! খবর কি?"
আরিফ বললেন, "এইতো ভাই। ভালোই। "
অফিসের ভেতর আজকে সবাইকেই খুশি খুশি লাগছে। তার পাশের টেবিলের জামান সাহেব এমনিতেই তেলতেলে মানুষ। আজ যেন মুখ দিয়ে মধু বের হচ্ছে।
আরিফ সাহেবকে বসতে দেখে বললেন, "ভাই শুনেছেন?"
আরিফ অবাক হয়ে বললেন, "কি শুনবো?"
"আররে ভাই এমন হলে চলে। আপনি দেখি দুনিয়াদারির কোনো খবর রাখেন না। শুনেন তাইলে। আমাদের ডিপার্টমেন্ট বড় দা মেরেছে এবার। দানা- পানি এর পরিমাণ হুলুস্থুল রকমের। বুঝেনি তো পার্টি মালদার। আজকাল এদের কাচা পয়সা। মাল যাচ্ছে আর আসছে। এদের কি অপেক্ষার সময় আছে?"
আরিফ চুপ করে শুনলেন কথা গুলো। তার কিছু বলার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বললেন না। এদের সাথে না জড়াইলেই হলো। এদের কাজ এরা করুক। তার কি?
হঠাৎ জামান সাহেব তার দিকে ঝুকে এলেন। ফিসফিসিয়ে বললেন, "ভাই আপনি তো আকাশের চাঁদ পেয়ে গেলেন।"
আরিফ লোকটির কথার কোনো অর্থ খুজে পেলেন না। এই অফিসে বদলি হয়েছে তার বেশিদিন হয়নি। তাই এদের এখনো তিনি ঠিক বুঝতে পারেন না। হুটহাট করে এরা একটা কথা বলে। যার উত্তর তিনি ভেবে পান না।
"ভাইজান দেখি চিন্তায় পড়ে গেলেন। আরে ভাই ভয় নাই। এই লাইন এ আমরা দীর্ঘদিন ধরে আঁছি। ভয়ের কোনো কারণ নাই। আমরা সবাই আপনার কাজ দেখেছি। আপনি যদি ওই শিপমেন্ট টা আটকে না দিতেন। এতো আয় হতো না।"