শুভ্র আকাশ

384 8 0
                                    

অনার্স শেষ হতে চলল রেহানের, এখনো প্রেমের ফুল ফোটে নি। অবশেষে দ্বিতীয় বর্ষের একটা মেয়ের চোখকে তার আকর্ষণীয় মনে হয়েছে। গায়ের রঙ শ্যামলা হলেও ভরাট এবং কিছুটা লম্বাটে মুখে কোথাও দারুন মায়াকারা ভাব। তবে মেয়েটা বেশ স্মার্ট। লম্বা পাঁচ ফিট চার হবে। ইতমিধ্যে কৌশল করে নামও জানতে পেরেছে-রিয়ানা। রিয়ানার সাথে এ পর্যন্ত বেশ ক’বার চোখাচোখি হয়েছে। মেয়েটা কি ওর মনের কথা জেনে ফেলেছে! মেয়েরা খুব সহজেই ধরে ফেলে এ ব্যাপারগুলো।

রেহানের সমস্যা হলো সে গড়পড়তা একটা ছেলে। কোথাও ওর কোন বিশেষত্ব নেই। ভাল ছাত্র নয়। চেহারা কোন রকম। বাবা বড়লোক না তাই মানিব্যাগে টাকার ঘাটাতি থাকে সব সময়। শার্ট ইন করে পড়ে নি কখনো। কবিতা লেখে না, গাণ গায় না, আড্ডা দেয় না। তুখোর ছাত্রনেতা না হোক পাতিনেতাও নয়। তবে কীভাবে ও মেয়েটার সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। মাঝে দু-একবার এসব পথে দিয়ে নিজের প্রতিভাকে যাচাই করে দেখেছে। না কোথাও ঝিকিয়ে ওঠার মতো কোন সম্ভাবনা খুঁজে পায় নি নিজের ভেতর। বন্ধুরা চুটিয়ে প্রেম করছে। কেউ কেউ ছ্যাকা খেয়ে ও পথে আর না যাওয়ার বিষয়ে প্রতিজ্ঞা করেছে। রেহানের কষ্টা ওর তো কিছুই হল না। তাই বলে ও বন্ধুরা ছেড়ে দেবার নয়। ঠিক করেছে তারা তাদের সমস্ত জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা দিয়ে দু’জনের প্রেমের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। এ জন্য সন্ধ্যায় মিটিং ডাকা হয়েছে।

সভার মাঝখানে রেহান অপরাধীর মতো মাথা নিচু করে বসে আছ। তার অপরাধ রিয়ানা নামের মেয়েটাকে সত্যি সত্যি ভাল লাগে। ওর বিশ্বাস ওই মেয়েটার সাথে একটা সন্ধ্যা পাশাপাশি না বসতে পারলে পৃথিবীটা মিথ্যা হয়ে যাবে। রিয়ানা যে পথ দিয়ে হাঁটে সে পথটাকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর পথ বলে মনে হয়। সবচেয়ে ভাল লাগে ওদের বিভাগের দখিনের দেয়ালটা। ক্লাস না থাকলে রিয়ানা ওই দেয়ালে ঠেস দিয়ে আকাশের দিকে তাকায়। তখন রেহানের মনে হয় ওই আকাশে অনেক রহস্য আর ভালবাসা মিশে আছে। তাই ফাঁক পেলে সে ইদানীং আকাশ দেখতে শিখেছে।

’শেষ পর্যন্ত তুইও এ রাস্তায় এলি! তোর আর দোষ কি মানুষ মাত্র প্রেমের কাঙাল। তবে জেনে রাখ যে পায় সে পায়।’ জাহিদ বলল। জাহিদ একটা মাত্র সম্পর্ক তৈরি করতে পেরেছিল। মেয়েটা এক মাস ওর সাথে লটর-পটর করে জানিয়ে দিয়েছে যে, ও আসলে বাজিয়ে দেখেছে।

দিন চলে যায়Where stories live. Discover now