Part:1

65 1 1
                                    


হ্যালো আজিজ মেয়েটা এখনো বাসায় এলোনা।ফোন ও ধরছেনা।এতক্ষন তো মেয়েটা বাহিরে থাকেনা।সাতটা বেজে এলো।কিছুটা চিন্তিত কন্ঠেই আনিলা বেগম বলে উঠলেন।কথা বলতে গিয়ে গলা ভেঙ্গে এলো ওনার।কিছুটা থ মেরে রইলেন কিছুক্ষন আজিজ সাহেব।স্ত্রীর কথা শুনে কিছুক্ষনের জন্য স্তব্ধ হয়ে রইলেন আজিজ সাহেব।কিছুতেই হজম করতে পারছেননা কথা গুলো।স্বামীকে এভাবে চুপ থাকতে দেখে আনিলা বেগম বলে উঠলেন কি হলো কিছু বলো আজিজ। মেয়ে বাসায় আসে নাই।রুহী এখনো বাসায় আসে নাই।কিছু তো বলো।চেঁচিয়ে উঠলেন আনিলা বেগম।না মানে আমি এক্ষুনি আসছি চিন্তা করোনা।রুপন্তি কই?বলে উঠলেন আজিজ সাহেব।ফোন রেখে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন আজিজ সাহেব।রুহী ওনার বড় মেয়ে আর রুপন্তী ছোট মেয়ে।মেয়ে দুটোই কলিজার টুকরা?রুহী এখনো বাসায় ফিরেনি ভাবতেই বুকটা কেঁপে উঠলো আজিজ সাহেবের।
মা!!! মা!!!!!!আপি কই?রুপন্তি চেঁচাতে চেঁচাতে আনিলা বেগমের কাছে এসে দাঁড়ালো।মায়ের চোখে পানি দেখে কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়ে রুপন্তি।আপি কই মা?বলো না আপি কই?মায়ের হাত ধরে ঝাঁকাতে থাকে রুপন্তি।ও এখনো আসে নি কাঁদতে কাঁদতে বললেন আনিলা বেগম।আসেনি মানে?ফোন দাওনি?বলে উঠে রুপন্তি।ওর ফোন বন্ধ বলেই কেঁদে উঠলেন আনিলা বেগম।
আনিলা!!!কোন খবর পেলে? কিছু টা দৌড়ে ঘরে ঢুকলেন আজিজ সাহেব।মাথা তুলে নাড়লেন আনিলা বেগম।আজিজ সাহেব কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই ফোন বেজে উঠে ওনার।ফোন হাতে নিয়ে অন্য রুমে চলে এলেন আজিজ।
,,,,,,,,,,,,,,হ্যালো স্যার রায়ান ফোন করতেছিলো মাইয়া পাঠানোর জন্য।অপর পাশ থেকে বললো আজিজ সাহেবের এ্যাসিস্টেন্ট রাসেল।আজিজ সাহেব একজন নাম করা রিপোর্টার।দেশের সকল খারাপ খবর সবার সামনে তুলে ধরা ওনার কাজ।কিন্তু ওনি স্করপিয়ন গ্রুপের সাথে মিলে ওদের সাহায্য করে মেয়ে পাচার কাজে।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,আমার বড় মেয়েকে পাচ্ছিনা।আর এসব কথ বলছিস?সিচুয়েশন বুঝে কল দিতে পারিসনা?নাকি সেই আক্কেলটুকু ও নেই।রাগী গলায় বললেন আজিজ সাহেব।
,,,,,,,,,,,,,,,,,স্যার রুহী মামনিরে পাচ্ছেন না?বলছেন কি?কই গেছে মেয়েটা?চিন্তিত হওয়ার ভান করলো রাসেল।
,,,,,,,,,,,,,,তোর এসব চিন্তা নিজের কাছে রাখ।ধমক দিয়ে উঠলেন আজিজ সাহেব।
,,,,,,,,,,,,,স্যার একটা কথা  বলি? আপনি রায়ান স্যারের কাছে যান।হয়ত রুহী মামনির খবর পেয়ে যাইতে ও পারেন।
,,,,,,,,,,,,,,,,,Are you mad?আমার মেয়ে কেন ঐখানে যাবে?রাগী গলায় প্রশ্ন করলেন আজিজ।
,,,,,,,,,,,স্যার একবার চেষ্টা করেন।পুলিশকে ও খবর দেন ওদের কাছে ও যান।বলে উঠলো রাসেল।
                                    আজিজ সাহেব কল কেঁটে দিলো।খাটের ওপর ধপ করে বসে পড়লো।কি করবে এখন?কোন কূল কিনারা পাচ্ছেননা।কি মনে করে ফোন পকেটে ঢুকিয়ে বেরিয়ে পড়লেন।
দশটা বারোটা মেয়ে হাত মুখ বেঁধে রাখা অবস্থায় পড়ে আছে।সবাই সেন্সলেস অবস্থায়।হঠাৎ পায়ে কিছু সুড়সুড়ি লাগায় জেগে উঠে রুহী।বন্ধ চোখ জোড়া খুলে তাকায়।আশেপাশে তাকিয়ে জ্ঞান হারাবার জোগাড়।কতগুলো মেয়ে ওর মতো অবস্থায় পড়ে আছে।পায়ের ওপর তেলাপোক্কা উঠতে দেখে পা ঝাড়া শুরু করে রুহী।অনেক বার চিৎকার করার চেষ্টা করলো রুহী।কিন্তু মুখ বাঁধা।কি করবে?কই ও এখন?বিকেলে কলেজ থেকে বেরিয়ে এসেছিলো।কিন্তু এর পর কি হয়েছিলো মনে করতে পারছেনা রুহী।আশেপাশের মেয়ে গুলো কে দেখতে দেখতে চোখে রাজ্যের ঘুম চলে আসে রুহীর।বন্ধ চোখজোড়া বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে ওর।
                রায়ানের সামনে বসে আছে আজিজ।আমার মেয়েকে পাচ্ছিনা।বলে উঠলেন আজিজ সাহেব।সিগারেটে লম্বা টান দিয়ে ধোঁয়াটা আজিজ সাহেবের মুখের ওপর ফেলল রায়ান।কি নাম মেয়ের কতো বছর বয়স?হাইট কতো? সাইজ কতো?প্রশ্ন করতে লাগলো রায়ান।
প্লিজ রায়ান স্যার আমার মেয়েকে নিয়ে এসব বলবেননা।বলে উঠলেন আজিজ সাহেব।হাহ অন্য মেয়েদের বেলায় মাল আর নিজের মেয়ের বেলায় এতো লাগছে।You are bloody scoundrel Ajij.বলে শয়তানি হাসি দিলো রায়ান।
জামাল টাকার ব্রিফকেজ টা নিয়ে আজিজের মুখে মার।পাশের রুম থেকে কাউকে ডাকলো রায়ান।টাকা চাইনা আমার মেয়ে কই?বলে উঠলেন আজিজ সাহেব।
মেয়ের আশা ছেড়ে দাও আজিজ।ও এখন আমার কাছে আছে।তোর মেয়েটাতো শালা সেই মাল।অনেক টাকায় বিক্রী করা যাবে।মিনিমাম পঞ্চাশ লাখ টাকা।বলেই আবার সিগারেটে টান দিলো রায়ান।না আমার মেয়েকে দিয়ে দে।নাহলে তোমাকে আর সাহায্য করবোনা।চিৎকার করে উঠলেন আজিজ।তোর তো সাহস কম না?আমার সাথে চিৎকার করে কথা বলছিস?রাগী গলায় বলল রায়ান।
আমার মেয়েকে দিয়ে দাও রায়ান। আবার ও চিৎকার করলেন আজিজ সাহেব।
রায়ানের কিছু লোক এসে আজিজ সাহেব এলোপাথাড়ি মারতে লাগলো।বেশ কিছুক্ষন মারার পর আজিজ সাহেবকে বের করে দিলো ওরা।আজিজ সাহেব ব্যাথীত হৃদয়ে বাড়ি ফিরে এলেন।স্বামীর এ অবস্থা দেখে আরো ভেঙ্গে পড়লেন আনিলা বেগম।
কি হলো? এমন অবস্থা কেন তোমার?আঁৎকে উঠলেন আনিলা বেগম।
রুহী কই? আমার মেয়ে কই?আশেপাশে মেয়েকে খুঁজতে লাগলেন আনিলা বেগম।
আনিলা কিছু কথা আছে তোমার সাথে।চলো আমার সাথে।স্ত্রীর হাত ধরে বললেন আজিজ সাহেব।আনিলা বেগম স্বামীর সাথে খাটে এসে বসলেন।দেখো আমি অনেক কিছু লুকিয়েছি তোমাদের থেকে।আমার কারনে আজ রুহী আমাদের থেকে দূরে।বলে উঠলেন আজিজ সাহেব।
কি বলছো এসব?কই আমার রুহী।স্বামীকে ঝাঁকাতে লাগলেন আনিলা বেগম।আজিজ সাহেব তার স্করপিয়ন মাফিয়া দলকে মেয়ে পাচারে সাহায্য করা সহ রুহী কে তুলে নিয়ে যাওয়া সব খুলে বললেন স্ত্রীর কাছে।তুমি এতো বড় খারাপ জানলে কখনই ছেড়ে চলে যেতাম তেমাকে।কতো মা বাবার বুক খালি করেছো তুমি?এখন সেই শাস্তি আল্লাহ আমাদের দিচ্ছেন।জলদি আমার মেয়েকে ফিরায় দাও।নাহলে এই বাসায় আগুন লাগায় দিবো।চেঁচিয়ে উঠলেন আনিলা বেগম।ঠিক সেই মুহূর্তে রুমে এলো রুপন্তি।বাবা রাসেল চাচু এসেছে।তোমার মুখে রক্ত কেন বাবা?এক নাগাড়ে প্রশ্ন করতে লাগলো রুপন্তী। কিছুনা মা তুমি বসো আমি কথা বলি তোমার চাচুর সাথে।কথা গুলো বলে মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বের হয়ে  গেলেন রুম থেকে। আনিলা বেগম ও সেখানে এসে দাঁড়ালেন মেয়ের কোন খবর পায় নাকি সেই আশায়।
স্যার আমার মনে হয় পুলিশ সাহায্য করতে পারবেনা এক্ষেত্রে।মন্ত্রীদের সাথে কথা বললাম। ওনারা কিছু করতে রাজি হচ্ছেনা।আর পুলিশ তো পারবেনা।এক নাগাড়ে কথা গুলো বলে থামলো রাসেল।কি করবো এখন আমি? কে সাহায্য করবে আমাকে?দাঁতে দাঁত চেপে প্রশ্ন করলেন আজিজ সাহেব।
স্যার একজন আছে।যে অবশ্যই রুহী মামনিকে আনায় সাহায্য করবে। বললো রাসেল।
কে সে?রাগী গলায় প্রশ্ন করলেন আজিজ সাহেব।
স্যার আপনাকে বলে লাভ নাই।সাহায্য নেবেননা ওনার নাম শুনলে।বলে উঠলো রাসেল।
ভনিতা করোনা।কে সে বলো? রেগে গেলেন আজিজ সাহেব।
স্যার ওনি রোয়েন আহমেদ।বলে উঠলো রাসেল।
হোয়াট আমি কখনো যাবোনা।সুযোগ পেলে ও আমাকে দমানোর চেষ্টা করবে।
মেয়েটা আমাদের কাছে নেই।না জানি কি অবস্থায় আছে মেয়েটা?আর তুমি এখনো দমাদমির কথা ভাবছো?তোমার মতো এমন শয়তান আর জঘন্য বাপ আর কোথাও দেখিনি।আজিজ সাহেবের দিকে তাকিয়ে কথা গুলি বলছিলেন আনিলা বেগম।আজিজ সাহেব থেকে চোখ সরিয়ে রাসেলের দিকে তাকালেন ওনি।রাসেল এই রোয়েন কই থাকে?প্লিজ নিয়ে চলো।
জি ভাবি চলুন।বলে উঠে দাঁড়ালো রাসেল।আনিলা বেগম আর রাসেল দরজার সামনে আগাতেই আজিজ সাহেব বলে উঠলেন ওয়েট,আমি ও যাবো।

চলবে

Married To The Cobra kingWhere stories live. Discover now