২১

451 23 7
                                    

আমি আবার, আর একটা বার
লেখা #AbiarMaria

২১

সকালে যখন তরীর ঘুম ভাঙলো, তখন সে আবিষ্কার করল জিসান বিছানায় নেই। জিসান কি ঘুমাতে আসেনি? বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালো সে। ঘড়িতে তখন সকাল পাঁচটা বেজে চার। দ্রুত বিছানা ছেড়ে উঠে নামায পড়ে নিল। জিসানের কোনো খবর নেই কেন? ও কি চিলেকোঠায়? ওখানেই রাত কাটিয়েছে নাকি? তরী ঘুমের পোশাক বদলে ছাদের দিকে রওনা দিল। জোছনার ঘর থেকে খুটখাট আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে, উনি বোধহয় নামাযের জন্য উঠেছেন। তরী পুরো বাসায় জিসানকে না পেয়ে দরজা খুলে ছাদের দিকে রওনা দিল। ছাদে উঠে চিলেকোঠার সামনের জানালা দিয়ে দেখল, জিসান খালি গায়ে প্যান্ট পরেই উপুড় হয়ে ঘুমাচ্ছে। ও কি গিয়ে জিসানকে ডাকবে? ঘরে ঢোকা কি ঠিক হবে? তরী বেশ কিছুক্ষণ ভেবে ঠিক করে যাবে না। জিসান বাসর রাতে ওকে স্পষ্ট মানা করেছিল। জিসান যে এখানে এসে ঘুমালো, বাসার সবাই কি ভাববে? তরী তো ওকে বের হয়ে যেতে বলেনি। মনে হচ্ছে এর প্রচুর রাগ!

তরী ছাদে হাঁটতে হাঁটতে আঙুল খুটতে খুটতে ভাবছে, প্রতিটা মানুষের মাঝে কোনো না কোনো বড় দোষ থাকে যা তাকে জীবনের পদে পদে সমস্যায় ফেলে। ঐ দোষ ম্যানেজ করতে করতে মানুষের জীবন শেষ হয়ে যায়, সম্পর্কে দূরত্ব চলে আসে। জিসানের সমস্যা কি? রাগ? নাকি অভিমান? কখনো জিসানকে ও রাগ বা অভিমান করতে দেখেনি। তাহলে এখন কেন ও এমন করছে? তরী ভাবে, দেখা যাক জিসান কি করে।

নিচে নেমে এসে নিজের কাজ করতে করতে যখন নাস্তা তৈরি করতে রান্নাঘরে গেল, তখন দেখল জিসান মাত্র বাসায় ঢুকছে। তরীকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে গেল। তরীও নিজের মত কাজ করে যাচ্ছে। ওর বাবা মা আসার সময় হয়ে গেছে। ওরা চাচ্ছে সকাল সকাল রওনা দিতে, এজন্য ইমরানের বাবা মা, জুঁই, ওর ছেলে মেয়েরা, ইকরা, খেয়া আর তরীর বাবা মা আসবে। এতগুলো মানুষের নাস্তার আয়োজন করতে সবাইকেই হাত লাগাতে হচ্ছে।

তরী আর নিজের ঘরে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। যখন সে রান্নাঘরের দিকটা মোটামুটি গুছিয়ে বেডরুমে গেল, তখন দেখল জিসান ওদের সকাল সকাল গোসল করিয়ে কাপড় বদলিয়ে দিয়েছে। তরী ঘরে ঢুকে দেখলো জিসান তন্দ্রার চুলে ছোট একটা ঝুটি করে দিচ্ছে। তরী জিসান দেখে স্মিত হেসে বলল,
“তুমি গোসল করে তৈরি হয়ে নাও, বাবা মা একটু পরেই আসবে”
তরী কোনো জবাব দেয়নি, চুপচাপ বাথরুমে ঢুকে গেছে। শাওয়ার ছেড়ে ভাবতে লাগলো, জিসান বোধহয় এমনিতেই রাতে থেকেছে চিলেকোঠার ঘরে। পরক্ষণে মনে হলো, এমনি এমনি সে কেন থাকবে? একটা মানুষ কেন এমনি এমনি সামান্য কারণে বের হয়ে যাবে? তরীর রাগ লাগছে। আপাতত কিছু করবে না, রাগটা সময়মতো প্রকাশ করবে।

আমি আবার, আর একটা বারTempat cerita menjadi hidup. Temukan sekarang