part 4

19 4 0
                                    

Continue:...রিমি দেখল এটা অরণ্য   বেশ  অনেকটা ভালো
লাগলো তার একটা আলাদা পজিটিভ মুহূর্ত। কিছুক্ষন অরণ্যের দিকে নিস্ফলক দৃষ্টি তে তাকিয়ে থাকে সে, হঠাৎ চারিদিক যেন অন্য রকম লাগে তার। দুটো চোখ একে অপরের দিকে তাকিয়ে। কোনো কবি সামনে থাকলে হয় তো ব্যাখ্যা করতে পারত সেই চাইনির সে দৃষ্টি কে ২টি ভাবে বাক্ত করা যায়, এক) এই দৃষ্টি হলো সেই দৃষ্টি যেটা সেই মুহূর্তে দাড়িয়ে দুজনের কাছে একটু শান্তি স্বস্তি এনে দেয় যেটা সেই মুহূর্তে দুজন চাইছিল।দুই) এক মুঠো ভালোবাসা ভরা দৃষ্টি ।
ভালোবাসা যেটা রিমি এত দিন ধরে খুঁজে বেড়াচ্ছে।রিমি জানে এই মুহূর্তে বসে বসে সে এই একটা মানুষ কেই চাইছিল রিমি এটাও জানে সে অরন্য কে খুব ভালোবাসে । শুধু একটাই প্রশ্ন তাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে আরন্যও কি তাকে ভালোবাসে?? একটুও অনুভূতি আছে কি তার প্রতি ? এই প্রশ্নের জন্যই সে আজ অব্দি তার মনের কথা টা বলতে পারেনি। এখন কিনা সেই অরণ্যে তার সামনে দাঁড়িয়ে??মনে মনে রিমি একটা প্রশ্ন করলো অরণ্যকে " অরণ্যে সত্যি কি ভালবাসিস একটুও আমায়?আমি বাসি খুব ভালোবাসবি আমায়?" কথাটা মুখে বলতে পারলো না তার বদলে মুখ দিয়ে বেরোলো " কিরে , তুই এখানে এই সময় ??"
অরণ্যে যেটা ভেবেছিল ঠিক তাই এটা  রিমি , রিমি কর দেখে সে অবাক ও খুশি দুটোই একসাথে হলো। সত্যি এখন তার কারোর সঙ্গর দরকার ছিল একটুও ভালো লাগছে না তার এই পরিস্থিতি একদিকে তার জন্মদিন, কাজের চাপ অপরদিকে কালকের ঘটনা সব মিলিয়ে ঘেঁটে গেছে সে । সে একটু কিছুক্ষনের শান্তি চায় বন্ধু বলতে সবাই যে যার কাজে ব্যাস্ত এই ব্যাস্ততার দিনে রিমি কে সে দেখে ভালই অবাক হলো। আর খুশি হলো এই জন্যই যে রিমি তাকে বুঝবে । রিমির পাশের বসার জায়গায় গিয়ে সে বসলো।
*******
কিরে রি , তুই এখানে?
~একি প্রশ্ন আমি তোকে করছি অরণ্যে, তুই কি করছিস??
- কিছুই না রে  , এই এমনি ঘুরতে বেড়িয়েছিলাম ।
~ আমিও তাই , এই জায়গাটা আমার খুব প্রিয় তাই এখানে এসেছি। আগেও আসতাম জানিস বাবা মায়ের সাথে ভাইকে নিয়েও এসেছি অনেক বার ওই যে দূরে বাচ্চাটাকে দেখছিস এমন ছিল সব ।
- ওও, তা কাকু কাকিমা কেমন আছেন?
~ খুব ভালোই আছে । আচ্ছা অরণ্যে তুই ঠিক আছিস তো? তোকে। দেখে মনে হচ্ছে কিছু একটা হয়েচে।
- না না কি হবে আমার ?
~ সত্যি তো?দেখ আমায় মিথ্যে বলিস না প্লিজ। আমার চোখ কে ফাঁকি দিতে পারবি না তুই বল নারে
- না না কিছু হয়নি
~ মিথ্যে কথা বল অরন্য কি হয়েছে
( না আর পাচ্ছে না অরন্য খুব কষ্ট হচ্ছে এবার বলেই ফেললো সে)
- জানিস রী....... (কাল থেকে হাওয়া ঘটনা গুলো বলে ফেললো সে)... আর পাচ্ছি না আমি
হঠাৎ করে অরণ্যে জড়িয়ে ধরলো রিমিকে একদম শক্ত করে প্রথমে ঘাবড়ে গেছিলো রিমি তার পর অনুভব করলো অরণ্যের চোখের জল.. কিছু বললো না রিমি ওকে জড়িয়েথাকতে দিল । কিছু ক্ষন পর অরণ্য রিমিকে ছেড়ে দিয়ে বলল
- so sorry রি আমায় ক্ষমা করে দে আমি নিজেকে সামলাতে পারিনি প্লীজ কিছু মনে করিস না।
~ না রে আমি কিছু মনে করিনি তুই তোর কথা বলে হালকা হয়েছিস সেটাতেই আমি খুশি আর তোর কোনো কিছুতেই আমি কিছু মনে করিনা .. 
- এবার বল কি হয়েছে তোর??
~ আরে আমার কথা বাদ্দে । চল কিছু খেয়ে আসি না করবি না কিন্তু আমি জানি আজ তোর জন্মদিন তাই আজ আমি তোকে ট্রিট দেব. চল
রিমি উঠে এগোতে যাবে এমন সময় বাঁধা দিল অরণ্যের হাত
~ দাঁড়া রী , কোথাও যাবি না  তুই জন্মদিন পরে দেখা যাবে আগে তুই বল......
******
বাড়ি ফিরতে আজ দেরি হলো না বেশি .. বেশ কিছুটা ভালো সময় কাটাল অরণ্যের সাথে  ।  ছেলে টা জোর করে সব জেনে নিল তার থেকে না করতে পারেনি রিমি , খুব হালকা লাগছে আজ তার। বাড়িতে ঢুকেই প্রথমেই দেখা হলো পিসিমনির সাথে রিমিকে দেখে বিরক্তি মুখে বলল ,"কোথায় ছিলি এতক্ষন? রাত ৯.০০ টা বাজে এই সময় ভদ্র বাড়ির মেয়েরা বাড়ি ফেরে? আদেও চাকরি করিস তো ? যাকগে হাত ধুয়ে খেতে আয়।
~ না পিমনি আমি খাবো না খেয়ে এসেছি । আর হ্যাঁ আমি চাকরি করি তাই ওভার টাইম হলে দেরি একটু হয়
- কি একে দেরিতে ফিরেছিস তার ওপর খেয়েও এসেছিস ? কত উচ্ছন্নে গেছিস রে তুই এই পোষাক দেরিতে বাড়ি ফেরা বাইরে খেয়ে আসা ছি এসব ভদ্র বাড়ির মেয়েরা করে? আমাদের কোনোদিন করতে দেখেছিস তুই ? দাদা ও দাদা .. তোমার মেয়ে যে উচ্ছন্নে গেলো। এই মেয়ের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তুমি ??
~   কি সব বলছো তুমি পিমনী কেন বলছো এসব?? আমার পোষাক নিয়ে তো সকালেই বললাম । আর খাওয়া নিয়ে বলছো ? আমায় বললেই আমি খেয়ে আসতাম না আমার জন্য খাবার রাখবে সেটা আমি কি করে বুঝবো?? অন্যদিন তো থাকেনা ( কথাটা চিৎকার শুনে বেরিয়ে আসা বাড়ির লোক গুলোকে উদেশ্য করে বলল) ।

ডিং ডং করে বাড়ির কলিং বেলটা বেজে উঠলো । রিমির মা গেট টা খুলে দিতে দেখলো রিমির ভাই  বাড়ির সকল কে একসাথে দেখে বিশেষ করে রিমিকে দেখে বলল
√ কিরে বেশ ভালোই তো চলছে পার্কে একজন জড়িয়ে ধরছে তোকে হাত ধরে টানছে । তার সাথে আবার রেস্টুরেন্ট এ যাচ্ছিস ।  বাহ খুব ভালো , আবার তুই বাঁধাও দিলিনা এমন লাগছিল যেন তুই এইগুলো তে অভ্যস্ত । তো এটা কি প্রথম জন নাকি এর আগেও অনেকে করেছে এমন  দেখ তুই কি করিস কোথায় করিস সে সব তো আর আমাদের বলিস না ভাবিস শত্রু তাই বলা। এর আগেও তো  দুচার জন লোকের সাথে আগের দিন ওই স্টেশনের দিকে র রেষ্টুরেন্ট এ দেখলাম তোকে ...
কথা টা যেনো আগুনে ঘি ফেলল । রিমি এবার আর সহ্য করতে না পেরে একটা জোর চর লাগিয়ে দিল ভাই এর গালে ।
~ লজ্জা করে না তোর । তোর থেকে বড় একজনের সাথে এই ভাষায় কথা বলতে?? হ্যাঁ হতে পারে আমি তোর নিজের দিদি নই। তাও লজ্জা করে না ?? আমি কি কাজ করি সে বিষয়ে তোমরা কোনোদিন জানতে চাও নই তাই বলিনি । সেদিন দু জন লোক আমার একজন ক্লায়ন্ড ছিল । আর তাদের নিয়ে যাওয়া একটা স্টেপ অফ বিজনেস বুঝিস সেটা ?? আর শোন ও পিমণী  তুমি দুদিনের জন্যে এখানে এসেছ থাকো খাও ঘুরে বেড়াও আনন্দ আমার ব্যাক্তিগত জীবনে নাক গলিও না আর এই যে দাদা দাদা করো সব বিষয়ে সেই দাদা কোনোদিন খোঁজ ও নেয়না আমি কি করি কেমন আছি । আমার মা কে আমার থেকে আলাদা করে দিয়েছেন। তাই আমার কিছু যায় আসেনা এই বাড়িতে আমি কিছু ফ্রি তে করিনা আমি টাকা দি । তোমার দাদার সাথে এই একটা বিষয়েই সম্পর্ক বুঝলে?? আর এই ছেলে টা যাকে আমি আমার ভাই বলি ওর সব দোষ মাফ করে দি কাও কে কিছু বলি না ওকে নিয়ে  ও কিকি করে না করে সব জানি আমি তাই বলছি ছেলেকে ঠিক হয়ে যেতে বল নইলে কোনদিন বাড়িতে পুলিশ আসবে তার ঠিক নেই । চলি.....

কথাগুলো বলে রিমি ওপরে চলে এলো । সমস্ত মুড টা খারাপ হয়ে গেছে তার ফ্রেশ হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিল সে সব খারাপের মাঝে সেই জড়িয়ে ধরা আর সেই হাতের ছোঁয়া  ফিরে ফিরে এলো তার মাথায় ও মনে। আবার ভালো লাগায় ভোরে গেল চারিদিক। কেউ যেন অরণ্যের গায়ের পারফিউম টা ঘরের চারিদিকে ছড়িয়ে দিয়েছে। এই ভালো লাগার মধ্যে স্বপ্ন তে রিমি খুঁজতে গেলো তার মনের মানুষ কে।

ভালোবাসার বারান্দাWhere stories live. Discover now