আমার এক ব্যাচমেট ছিলো, তার মা তাকে ছোটবেলা থেকে উঠতে বসতে সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট দিতো। পান থেকে চুন খসলে সেই মা তার সন্তানের সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিতেন। মা কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছেন, এরচেয়ে বড় শাস্তি একটা সন্তানের জন্য আর কিছু হতে পারে না।ছোটবেলায় আমার সেই ব্যাচমেট এইটার কারণে পাগল পাগল হয়ে যেতো। স্কুলে যেয়ে দেখতাম, মা কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে, এজন্য উদভ্রান্তের মত করে হা হুতাশ করতো। ছেলেটার দূর্বলতার সুযোগ এমনভাবে মা নিচ্ছেন, এটা দেখে আমার বেশ খারাপ লাগতো।
একটা লম্বা সময় যাওয়ার পরে আমার সেই ব্যাচমেট হুট করে আবিষ্কার করলো, কিছু হলেই তার মা যে তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে, বিষয়টা তার কাছে বেশ ভালোই লাগছে। নীরবতা এঞ্জয় করতে করতে সে রিল্যাক্স মুডে তার দৈনন্দিন কাজকর্ম করতো। তার দূর্বলতা এক্সপ্লয়েট করার চেষ্টায় রত তার মা কে সে ঘৃণা করে নিজে থেকেই কথাবার্তা বন্ধ করে দিলো।
আমার সেই ব্যাচমেট এখন তার মায়ের সাথে কথা বলে না দীর্ঘদিন। জিজ্ঞেস করায় বলেছিলো, তার মায়ের থাকা না থাকায় তার আর কিছু যায় আসে না। তার মা এখন কেঁদেকেটে বুক ভাসাইতেছে ছেলে তার সাথে কথা বলে না দেখে।
(২)
এক ছোটবোন ছিলো, বাচ্চা একটা ছেলেকে টিউশানি করাতো। বাচ্চাটাকে পড়াতে পড়াতে আমার ছোটবোন মায়ায় পড়ে গেলো, আপন ভাইয়ের মত আদর করতো। মাঝেমধ্যেই চকলেট, খেলনা এসব নিয়ে যেতো। বাচ্চাও আমার ছোটবোনকে ছাড়া কিছু বুঝতো না। বিষয়টা খেয়াল করলো সেই বাচ্চার মা। তিনি বিষয়টাকে এক্সপ্লয়েট করা শুরু করলেন।
শুরুতে টাকাপয়সা দিতেন ভালোই, ফ্যামিলি ছিলো ধনী। এরপরে আন্টি তার সংসারের বিভিন্ন অসুবিধার অজুহাত দেখিয়ে টাকাপয়সা কমানো শুরু করলেন। যখন দেখলেন, বাচ্চাটার প্রতি মায়া থাকায় আমার ছোটবোন কম টাকায়ও পড়াচ্ছে, আন্টি টাকাপয়সা দিনকে দিন আরও কমিয়ে একেবারে বেয়ার মিনিমামে নিয়ে এলেন। এরপরে শুরু করলেন টাকা দেয়া নিয়ে টালবাহানা করা। অবস্থা এমন দাঁড়ালো, টিউশান করে যাতায়াত খরচই উঠছে না।