প্রেমিকাকে নিয়ে পালিয়ে টিন শেডের একটা ঘরে উঠলো প্রেমিক।সন্ধায় শুরু হলো প্রচন্ড বৃষ্টি!
দেখতে দেখতেই ঘরের মেঝে ভর্তি জল উঠে গেলো।সঙ্কোচ ভরা চোখে প্রেমিকার দিকে তাকালো প্রেমিকটি।তার চোখ চকচক করছে।বললো
" ওয়াও! ঘরের মধ্যে সুইমিং পুল! "
তার ব্যঙ্গ করা কথাটা প্রেমিকটি ভিষণ ব্যথিত করলো।মেয়েটা অতি স্বচ্ছল পরিবারের।ছেলেটি মধ্যেবিত্ত।মায়ের গয়না চুরি করে পালানোর জন্য ৪ হাজার টাকার যোগাড় করেছে।টাকা বাঁচাতে এই টিনশেডের ঘর নিয়েছিলো।মেয়েটা তাকে অবাক করে দিয়ে বললো
" একটা সার্ফএক্সেল নিয়ে আসো তো "
ছেলেটি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল " কি করবে? "
" মেঝেতে ঢেলে দিবো।তারপর পিচ্ছিল মেঝেতে দু'জনে আছাড় খেয়ে পড়বো "
ওর কথায় হতভম্ব হয়ে বৃষ্টির রাতে দোকান থেকে সার্ফএক্সেল নিয়ে আসলো ছেলেটি।ও তীব্র কৌতুহলী হয়ে মেঝেতে পাউডার ঢাললো।তারপর পা দিয়ে সেই জল ছড়িয়ে দিলো পুরো মেঝেতে।মুহুর্তেই ফ্যানা দিয়ে ভরে গেলো মেঝে।
তারপর মেঝেতে ধপ করে বসে বললো " আমার হাত ধরো।পুরো মেঝেতে আমায় টেনে নিয়ে বেড়াবা।এখন তুমি ঘোরা,আর আমি সাদী "
মেয়েটির আনন্দে জ্বলজ্বল করতে থাকা চোখ দেখে কিছু বলার সাহস হলো না।ওর হাত ধরে সারা ঘরের মেঝেতে টেনে নিয়ে বেড়াতে লাগলো ছেলেটি।
বৃষ্টি থেমে গেলো।ও আগ্রহী হয়ে বললো " ইশশ,বৃষ্টি থেমে গেলো! এখনো তো ভেজাই হলো না "
" সুপ্তা তুমি কি পাগল হয়ে গেছো?এতো ভিজলে তো জ্বর হবে।বাড়তি খরচ।জামা পাল্টে গা মুছে নাও "
এটা বলে ব্যাগ থেকে গামছা বেড় করে ওর দিকে এগিয়ে দিলো ছেলেটি।মনে মনে ভাবতে লাগলাম কী চমৎকার একটা মেয়ে!এখানে অন্য মেয়ে হলে কতক্ষণ আগেই চলে যেতো।এখনো ঠিক বুঝতে পারিনা,রুপবতী এই মেয়েটা কি দেখে আমার প্রেমে পড়লো!
সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি শুরু হলো।মেয়েটির তীব্র জেদ সহ্য করে টানা আধাঘন্টা বৃষ্টিতে ভিজছি এরমধ্যে ছেলেটি ওকে বললো
" তোমার অনুশোচনা হচ্ছে না? এমন এক ছেলের সাথে পালালে, যার একটা ভালো রুম নেবার সামর্থ্যও নেই!মেঝে ভর্তি বৃষ্টির জল উঠে "
মেয়েটা হেসে বললো " আমায় ভালোবাসার সামর্থ্য আছে? "
ছেলেটি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল" হ্যা "
মেয়েটা জড়িয়ে ধরে বললো " এতেই চলবে "
বলল ঠিকই, কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই সবকিছুতে অভিযোগ করা শুরু করল। খাট শক্ত ঘুমানো যায় না,ফ্যান নাই গরম লাগে, ফাস্টফুড খেতে ইচ্ছে করে, ডালভাতে পেট ভরে না।
শেষে একদিন সে বলল " দেখ, সেদিন আবেগের বশে চলে এসেছিলাম। সেটা যে ভুল ছিল তা এখন বুঝতে পারছি। তুমি আসলে আমার যোগ্য নও"
সে তার বাবার কাছে ফিরে গেল। তার বাবা তাকে একটা চড় মেরে বুকে টেনে নিল। তারপর এক কোটিপতির ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে দিল। সে সেই কোটিপতির সাথে সুখের সংসার শুরু করে দিল।
ছেলেটি কিছুদিন দেবদাস হয়ে ঘুরে বেড়ালো। তারপর নিজের বাড়ি ফিরে গিয়ে দেখে যে মা গয়না আর ছেলের শোকে হার্ট-অ্যাটার্ক করে মরে গেছে। এই দেখে ছেলেটি পাগল হয়ে যায়।মেয়েটি এখন কোটি টাকার শপিং করে, কোটিপতি স্বামীর সাথে হীরে-জহরতের গয়না পরে পার্টিতে যায়, ছুটিতে হংকং, লন্ডন, হাওয়াই ঘ্রতে যায়। আর ছেলেটি এলোমেলো চুলে, ন্যাংটা হয়ে, গায়ে ছাই আর ধুলা মেখে, জিহ্বা বের করে, হুক্কাহুয়া হিরো আলম বলে বলে রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলে রাস্তা হারিয়ে।