প্রতীক্ষা

17 2 0
                                    



পথের শেষে ছেলেটা থমকে দাঁড়ালো, হয়তো একবার ঘুরবে বলেও ভাবল, কিন্তু পারল না।

ঘুরলেই তার চোখে পড়বে ছলছল জলে ভরা দুটো চোখ, যে চোখ শুধু প্রতীক্ষায় আছে তার ফিরে আসার।

দুটো চোখ শুধু জানে কতটা উদ্বেগ জেগে থাকবে তার মধ্যে।

দুটো চোখ জানে হাহাকার কিভাবে ফুটে উঠবে সেই চোখে।

হাজার মাইল দূরে পাড়ি দিয়েছে ছেলে শুধু নিজের ভবিষ্যতের আশায়।

বাকিটা তো সামলে দিয়েছে, বাবাকে মানিয়ে নিয়েছে,

মা।

বছরে দেখা হবে দুবার। হয়তো তাও নয়। তবু একবারও বিদ্রোহ জানায় নি ওই চোখ।

চোখ শুধু দিয়েছে ভরসা আর আশ্বাস, দিয়েছে অফুরন্ত প্রাণ, নিজের নির্যাসটুকু দিয়ে।

কখনো ফেরত চায় নি কিছু।

বলেনি, " বাবা, এবার একটু আমদের কথা ভাব, ভাব তোমার চিন্তিত বাবাকে নিয়ে"

বলেনি নিজের কথাটাও কোনোদিন, অভিযোগ নেই ওজর বিজোড় নিয়ে।

সময় দিয়েছে, সময় নেই নি শুধু, সময় নেই নি সমস্যা ছেলের মেটাতে।

নিজের কথা মুখ ফুটে বলে নি কো, চায় নি কখনো নিজেকে নিজেই সারাতে।

চোখ দুটো শুধু ছলছল করে ওঠে, একা ঘরে বসে রবি ঠাকুর পড়ে যেই

চোখ দুটো শুধু আশায় বসে থাকে, ছেলে বুঝি ফোন করল এই।

হয়তো এটা সাধারন কোনো ঘটনা, সাধারন স্বরে সাধারন ভাবে বলা।

অসাধারন তো চোখ দুটো থাকে শুধু, রাতজাগা, ঘুমহীন চোখজ্বলা।

মা চিরদিন মা হয়েই থেকে যায়, জন্ম দেওয়াই সব কথা তাতে নয়,

ছেলেরা শুধুই লিখে যায় স্তোতবাক্য, সম্মানের চেয়ে কথা হয়ে ওঠে বড়।

মা চিরদিন ক্ষমার আধার হয়েই, অসম্মানেও ক্ষমার প্রতীক হয়।

মা চিরদিন আঁধার বুকে নিয়ে, জ্বালিয়ে আলোয় আলোকিত করে ঘর।

তোমার জন্য লেখার মত বাক্য, লেখনীর আগায় আসে না মা গো আর।

তোমার জন্য স্বপ্ন সাজাই শুধু, স্বপ্ন ভাঙ্গে, গড়ি তারে বারবার।

তোমায় দেব উপহার, খুঁজে খুঁজে ফিরি কত। মনে লাগে না কিছুই।

তোমার মাপে স্বর্গাদপী গরীয়সী, সব উপহার ই জাতে ঠেকে নিচুই।

তোমার দান তো ফুরোবে না মা কখনো, নিয়ে নিয়ে হইয় নিঃস্বান্ত তোমার ছেলে।

মা, তোমার জন্য নিয়ে আসব পারি যদি, নিয়ে আসব একলা আকাশ পেলে।

মা, তোমার জন্যই নিয়ে আসব শুধু আমি, একলা আকাশ পেলে।

একলা কবির ছন্দগানKde žijí příběhy. Začni objevovat