২০ & শেষ পার্ট

514 19 18
                                    


আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না আমার কি করা উচিত। এমন টা না যে আমি বিয়েতে রাজি না। কিন্তু কারো ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্যে ব্যাপারটা ভালো লাগছেনা। আর তাছাড়া মামুন আমাকে পছন্দ করে বলে মনে হয় না। সে নেহায়েত মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ চাই তা না হলে আমাকে বিয়ে করার কথা বলতো না। কিন্তু মামুনের অবদানের কথা আমি ভুলতে পারি না। আমার ভাই এত সব সামলাতে পারতো না। নিজের অসুস্থতা, বাবার মৃত্যু, তাকে দাফন কাপনের কাজের মত এলাহি কারবার করা সম্ভব ছিল না আমার ভাইয়ের পক্ষে। আর ফারান?? সে আজ পর্যন্ত দুর্ভাগ্য ছাড়া কিছু বয়ে আনে নি। ওর আর আমার মাঝখানে আমার আব্বুর মৃত্যুর দেয়াল দাড়িয়ে। যেটা ভাঙা কখনো সম্ভব না। আব্বুর শেষ কথা ছিল আমি যেন ফারানের হাত থেকে মুক্তি পাই। মনে হচ্ছে তাই করা উচিত। 
বউ সেজে বসে আছি। কিছুক্ষনের মধ্যে আমার বিয়ে। মরা বাড়িতে!! হাসি পায় শুনলে। মনে পড়ে যায় বিষাদ সিন্ধু গ্রন্থে কারবালার প্রান্তরে কাসেম সখিনার বিয়ের কথা। 
মা সাজিয়ে দিয়ে গেছেন। আম্মুর কোনো এক প্রিয় শাড়ি পড়েছি। যেটা নাকি আব্বুর দেয়া আম্মুকে প্রথম উপহার। প্রসাধনি বলতে কিছুই দেয়া হয় নি। আমি একা বসে আছি। পছন্দের মানুষের সাথে বিয়ে হচ্ছে। খুশি হওয়ার বদলে ভয় হচ্ছিল। যদি কোনো অঘটন ঘটে যায়?? যদি ফারান জেনে যাই! তাহলে কি হবে?? ফারানের আর কোনো খবর পায়নি আমি। কোথায় আছে কে জানে?? যেখানে থাকুক অন্তত বিয়ের খবর না পেলেই হল। কেননা যে আগুনের ফুলকি আমি তার চোখে দেখেছি তা দিয়ে সে সব কিছু ছাই করে দেবে।
আমার ডাক এলো। আম্মু নিতে এসেছে। যেতে যেতে আম্মু স্বামী সেবার কথা বলছিল। কিন্তু এই কানে ঢুকে সব কথা ওই কান দিয়ে বেড়িয়ে যাচ্ছিল। কারন আমার প্রচুন্ড ভয় করছিল। সেই সাথে ফারানের জন্য কষ্ট হচ্ছিল। সামনের রুমে পৌছে দেখলাম নিচে পাটি বিছানো হয়েছে। সেই সাথে বেডশিট। ওখানে মামুন বসে আছে গম্ভির ভাবে। তার মুখোমুখি হুজুর টাইপের লোকটা। তার মানে উনি কাজি। আর রিফাত দাড়িয়ে। রিফাত কে জিজ্ঞেস করলাম
...... ফারান কোথায়??
...... দেখবি!!
...... হুম
..... তাহলে দেখ
এই বলে রিফাত জানালাটা খুলে দিল। এই রুম আর ওই রুমের মধ্যে জানালা দিয়ে সব দেখা যায়। কিন্তু অবাক হলাম। কারন জানালাই আর কেউ না। স্বয়ং ফারান। সে ঢুলছিল। হুশ আছে নাই এই অবস্থা। জানালা খুলতে দেখে ও মনে হল চোখ খুলল। 
কিন্তু ভয়ে আমার জান চলে যাচ্ছিল। আমি কোন ভাবে চাচ্ছিলাম না যে বিয়েটা ফারানের সামনে হোক। কিন্তু এখন ফারান সামনে। তবে আটকানো। মনে হল বাধা অবস্থায়। ব্যপার কি?? ফারান কে এখানে রাখার মানে টা কি?? জিজ্ঞেস করলাম রিফাত কে। উত্তর দিল মামুন।
..... নিজের প্রিয়জন কে চোখের সামনে হারাতে দেখলে কেমন লাগে তা আমি ওকে বোঝাতে চাই। দেখাতে চাই হৃদয় ভাঙার কষ্ট কতটুকু। কতটুকু কষ্ট মানুষ সইতে পারে।
আমি চমকে উঠলাম মামুনের কথায়। কারন মামুন কখনো এভাবে কথা বলে না। এবার রিফাতও বলে উঠল
..... ঠিক তাই। ওকে বোঝাতে চাই যে ছেলের সামনে পিতার মৃত্যুর ছটফটানি কেমন লাগে।
এই সময় কাজি ডাক দিলেন। আম্মু মামুনের পাশে আমাকে বসিয়ে দিলেন। ফারানের গোঙানির আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছিল। হয়তো সে বুঝতে পেরেছে কিছু একটা হচ্ছে।
ফারানের গোঙানিতে আমার বুক ধরফর করছিল। বিয়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। আর ওদিকে ফারান আমাকে ডাকতে শুরু করেছে।
....... মোহিনী এসব কি হচ্ছে?? কি করছো তুমি??
রিফাত জানারার কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল
.... তোমার মোহিনীর বিয়ে হচ্ছে আরেকজনের সাথে!! 
এই কথাটা আগুনে ঘি ঢালার জন্য যথেষ্ট ছিল। মুহুর্তে ফারান ওখানে দাড়িয়ে গেল। কি হচ্ছিল তা বোঝার চেষ্টা করল। যখন বুঝতে পারল আমার বিয়ে হচ্ছে অন্য কারো সাথে তখন সে চিৎকার দিয়ে উঠল
....... মোহিনী চলে আসো ওখান থেকে।। ওয়াদা করেছিলে আমার সাথে থাকবে।। আর এটা কি পড়েছো?? বন্ধ কর সব কাজ! ভালো হবে না বলে দিচ্ছি। 
.আমি ফারানের দিকে তাকালাম। সে বাধন খোলার চেষ্টা করছে। ওর চোখে মুখের ঝিমানো ভাব চলে গিয়ে ক্ষিপ্রতা দেখা দিয়েছে। আর ফারানের এই ক্ষিপ্রতা কে আমি খুব ভয় পায়। জানি না ছাড়া পেলে সে কি করবে। আমার খুব ভয় করছিল। ভয়ে আমি মামুনের দিকে তাকালাম। কিন্তু মামুন কে চিন্তিত বলে মনে হল না। সে চুপচাপ বসে আছে। ওইদিকে ফারানের গর্জন বেড়ে চলেছে। বিয়েও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। 
হঠাৎ ফারানের আর কোনো সাড়া শব্দ শুনতে পেলাম না। ওদিকে কাজি সাহেব বলা শুরু করেছেন আপনি কি রেহনুমা হাসান কে বিবাহে রাজি আছে??
....... কবুল
...... কবুল
......কবুল
মামুন তিনবার কবুল বলে ফেলল। আর আর আমার হৃদপিন্ড প্রচুন্ড জোরে শব্দ করতে লাগল। আমি ঘামতে শুরু করলাম। এবার কাজি সাহেব আমাকে কবুল বলতে বললেন। কিন্তু আমাদের এখান কার মেয়ে দের কবুল বলতে হয়না। তার বদলে তারা পান ছুয়ে দেয়। আম্মু পান তিনটা বেধে রেখেছিল সামনে। ওদিকে হঠাৎ দরজায় দরাম দরাম বাড়ির আওয়াজ পাওয়া গেলো। ফারান কে বেধে রাখা হয়েছিল। তাহলে সে দরজায় আঘাত করছে কিভাবে?? তারমানে সে বাধন খুলে ফেলেছে। আমি তাড়াতাড়ি পান ছুয়ে দিলাম। এভাবে তিনবার। সবাই আলহামদুলিল্লাহ বলে মোনাজাত করতে লাগল। আমার ভয় হচ্ছিল। কেননা আমার দরজাটা নড়বড়ে কাঠের। ফারান যেভাবে দরজায় আঘাত করছে সেটা অবশ্যই ভেঙে যাবে। 
সবাই মোনাজাত করছিল। এদিকে বিকট শব্দে দরজা ভেঙে পড়ল। সবাই চমকে উঠল। মোনাজাত সম্পুর্ন করা হল না। সবাই এক যোগে দরজার দিকে তাকালো। সবাই বলতে আমি, আম্মু, রিফাত, মামুন, কাজি সাহেব আর তার সহযোগী। দরজা ভেঙে ফারান বেড়িয়ে এসেছে। চেহেরাটা লাল হয়ে আছে ভয়ানক ভাবে। চোখ দুটো যেন কোটর থেকে বেড়িয়ে আসবে। আর হাতের অবস্থা ভীষন খারাপ হয়েছে। হাত বেয়ে রক্ত পড়ছে। মনে হয় দড়ি কাটতে গিয়ে হাত কেটে ফেলেছে। তার উপর দরজায় ক্রমাগত আঘাত করার ফলে হাতের অবস্থা শোচনীয়। কিন্তু ফারানের সেদিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। আমি ভয়ে পিছু হটলাম। কিন্তু মামুন আমার হাত ধরে তার পাশে দাড় করাল। কাজি আর তার সহযোগী কাজ শেষ হয়েছে বলে চলে যাচ্ছিল। কাজি চলে যাওয়ার সময় ফারান কাজি কে পিছন থেকে ধরে ক্রমাগত দেওয়ালের সাথে বাড়ি দিচ্ছিল। কাজির মাথাটা ফেটে চৌচির, কিন্তু ফারান ছাড়ছিলনা। কাজির সহযোগী ভয়ে এক দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেলো। আম্মু ভয়ানক দৃশ্য দেখে অজ্ঞান হয়ে গেলো। আমার কথা বলাই বাহুল্য। আমি এক চিৎকার দিয়ে মামুনের পিছনে গিয়ে তাকে শক্ত করে ঝাপিয়ে ধরেছি। আমার শরীর থরথর করে কাপছিল। বিচলিত হল না শুধু মাত্র রিফাত আর মামুন। দুজনে এটায় চেয়েছিলো। ফারান কে শাস্তি দিতে চেয়েছিলো। আর এই শাস্তি টা সবার জন্য হয়ে যাচ্ছে। 
আমি মামুনের পান্জাবি ধরে একটু করে ওর হাতের নিচ দিয়ে দেখতে চাইছিলাম কি হচ্ছিল। যা দেখলাম তাতে আমার গা গুলিয়ে আসল। ফারান কাজির মাথা দেওয়ালে ক্রমাগত আঘাত করার ফলে কাজির মাথা ফেটে তাতে মগজ বেরিয়ে এসেছে কিছুটা। এর পর সে কাজি কে ছেড়ে দিল। কাজির নিথর দেহটা নিচে পড়ে গেল। এরপর ফারান দৃষ্টি বুলিয়ে কিছু খুজছিল। মনে হলো আমাকে খুজছে। এরপর ফারানের নজর আমার উপর পড়ল। আমি তখন মামুনের পিছন থেকে সবকিছু দেখছিলাম। ফারান আমার দিকে তাকাতেই আমি মামুনের পিছনে সরে গেলাম। ফারান এত বড় বড় করে নিঃশ্বাস ফেলছিল যে সবাই শুনছিল। ফারান আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। ওর পুরো শরীর কাজির রক্তে লাল হয়ে আছে। এবার আমাদের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে রিফাত পথ আটকালো। আমার ভয় করছিলো। কারন আমার ভাইয়ের কিছু হলে আমি নিজেকে কখনো মাফ করতে পারবনা। রিফাত পথ আটকালে ফারান রিফাতের দিক অগ্নিদৃষ্টিতে তাকালো। রিফাত বলল
....... চলে যাও এখান থেকে।।
ফারান এক দৃষ্টিতে রিফাতের দিকে তাকিয়ে ওকে ধাক্কা মারল। সাথে সাথে রিফাত নিচে পড়ে গেল। এবার রিফাত পড়ে যেতেই আবার এগিয়ে আসতে লাগল। তারপর ফারান মামুনের মুখোমুখি দাড়াল। এরপর ফারান আমাকে ধরার জন্য হাত বাড়ালে মামুন ধরে ফেলল। তারপর ফারান ঝাকি মেরে সরিয়ে দিয়ে বলল
....... ও আমার বউ এখন। ওর দিকে হাত বাড়ালেই হাত কেটে দেবো।
এই কথাই ফারান প্রচুন্ড রেগে গেল। সে চিৎকার করে মামুন কে বলতে লাগল
..... ও কারো বউ না।।। ও আমার মোহিনী।।।। বউ হবে শুধু আমার বউ।।। আর কারো না।।
..... মিথ্যা কথা।।। কিছুক্ষন আগে আমাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। সুতরাং আইনত সে আমার বউ। তার উপর একমাত্র আমার অধিকার আছে। 
এই কথায় ফারান মামুন কে নিচে ফেলে কিল ঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে দিচ্ছিল। মামুন যখন বেহুশ হয়ে গেল তখন রিফাত এসে পিছন থেকে ফারানের উপর ঝাপিয়ে পড়ল। আমি বুঝতে পারছিলাম না ওই মুহুর্তে আমার কি করা দরকার। আমার ভাই আর ফারান ধস্তা ধস্তি করছিল। আমি জানতাম আমার ভাই পেরে উঠবেনা। এবং ওইটাই হল। ফারান রিফাত কে ফেলে দিল। তারপর আমার দিকে আসতে লাগল। আর আমি আমি ভয়ে কাদতে কাদতে পিছু হঠতে লাগলাম। হটতে হটতে আমার পিঠ টেকে গেলো। ফারান একদম কাছাকাছি চলে আসল। রাগে ও থর থর করে কাপলেো ওর চোখ দুটোতে কষ্টের ছাপ পড়ে আছে। বিষাদ ভরা কন্ঠে সে আমাকে বলল
..... তুমি আমাকে ধোকা দিয়েছো মোহিনী!! তুমি আমাকে ধোকা দিয়েছ। আমি তোমাকে নিজের চেয়েও বেশি ভালবাস তাম। 
...... আ আ আ আমমমি কি কিছু করি নি।।
...... সত্যি তুমি কিছু করো নি??
আমি মাথা নেড়ে সায় দিলাম। আর ফারান তা শুনে বলল
..... তাহলে তুমি আমাকে ভালবাস!!
আমি শুধু ওর দিকে তাকায় থাকলাম। কিছু বুঝতে পারছিলাম না। ফারান আবার বলল
....... তুমি আমাকে ধোকা দিয়েছ, মিথ্যা বলেছো। তোমাকে এখান থেকে আমি অনেক অনেক দুরে নিয়ে যাব। যাতে কেউ আমাদের স্পর্শ করতে না পারে। কিন্তু তার আগে তোমাকে শাস্তি পেতে হবে।।

এই কথা বলে ফারান আমাকে এক ঝটকায় কাধে তুলে নিল। আমি চমকে গেলাম। কিন্তু পরক্ষনে আমি তাকে বাধা দিতে লাগলাম, কাদতে লাগলাম, মারতে লাগলাম কিন্তু কাজ হচ্ছিল না। সে আমাকে আমার রুমে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। তারপর আমাকে জোর করে জড়িয়ে ধরল। আমি চিৎকার করে ওকে ছাড়াতে চাচ্ছিলাম। কারন সেই সময় আমি অন্য কারো স্ত্রী ছিলাম। তাই আমি বলতে লাগলাম
....... দোহাই লাগে আমাকে ছেড়ে দেন। আমি আরেকজনের স্ত্রী। এটা পাপ।
এই কথায় সে আমাকে আরো জোরে চেপে ধরে আমার ওড়না ফেলে দিল। আর আমার ঘাড়ে চুমু দিচ্ছিল। এটা পাপ ছিল। অামার তাই অসহ্য লাগছিল। আমি মনে মনে আমার মৃত্যু কামনা করছিলাম। সেই সময় কেউ প্রচুন্ড জোরে জোরে দরজায় আঘাত করতে লাগল। ফারান কিন্তু ভ্রুক্ষেপ করল না। এক সময় দরজাটা বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে। এটা রিফাত ছিল। ফারান আমাকে ছেড়ে দিয়ে রিফাত কে মারতে উদ্ধত হল। রিফাতও কিছু না দেখে ওর ওপর ঝাপিয়ে পড়ল। আমি তাড়াতাড়ি ওড়না গায়ে দিলাম। চারদিকের এমন অবস্থা দেখে আমি কান্না করতে লাগলাম। একসময় ফারান নিচে ফেলে রিফাতের গলা চেপে ধরল। রিফাত নিঃশ্বাস নিতে পারছিল না। রিফাতের গলার রগ গুলি ভেসে উঠেছিল। আমি তাড়াতাড়ি ফারান কে ছাড়তে বললাম। কিন্তু ফারান ছাড়ল না। আমি অনুনয় করতে লাগলাম। আমার একটা মাত্র ভাই। ফারান আমার ভাইকে ছাড়ছিল না। আমাকে কিছু একটা করতে হবে। আমি কি করব! কি করব! ঘরে চোখ বুলালাম। কিছুই চোখে পড়ল না। কিন্তু ঘরের কোনে একটা রড চোখে পড়ল। এটা সব সময় আম্মু আমার রুমের চৌকির নিচে রাখত। আমি সেটা নিলাম। নিয়ে ফারানের পিছনে দাড়ালাম। রিফাতের চোখ দুটো বন্ধ হয়ে আসছে তবুও ফারান ছাড়ছে না। আমি মনে মনে কাউকে আঘাত করার জন্য মাফ চেয়ে নিলাম। তারপর চোখ বন্ধ করে গায়ের সর্ব শক্তি দিয়ে ফারানের মাথায় আঘাত করলাম। আঘাত করার পর আমি দাড়িয়ে রইলাম কি হয়ছে তা দেখার জন্য।ফারান থেমে গেল। তার হাত রিফাতের গলা থেকে সরে গেল। এর পর ফারান দাড়িয়ে কোন রকম আমার দিকে তাকিয়ে বলল
...... আ আ মার মো মো হিনী!!! 
শুধু এইটুকুই। এরপর ফারান ধপাস করে পড়ে গেল। আমি রড ফেলে দিয়ে রিফাত কে উঠালাম। রিফাত কে পানি এনে দিলাম। এরপর ফারান কে নির্জিব দেখে রিফাত চেক করতে লাগল। তারপর রিফাত আমার দিকে তাকিয়ে বলল
....... আপু তুই কি করছিস এটা?? এ তো নিঃশ্বাস নিচ্ছে না।
...... বিশ্বাস কর আমি কিছু করি নাই। আমি শুধু চেয়েছিলাম ও যেন তোকে ছেড়ে দেয়।
আমি তাড়াতাড়ি ফারান কে দেখতে লাগলাম। ওর মাথা ফেটে রক্ত বেরুচ্ছে। আমি ফারান কে ডাকতে লাগলাম। আমি কখনো ওকে মারতে চাইনি। আমার কাদতে শুরু করলাম। এটা কি হল?? কি করলাম আমি!! নিজ হাতে মানুষ খুন করলাম। আর কখনো কেউ বলবেনা মোহিনী আমি তোমাকে ভালবাসি!! কেউ বলবেনা Faran loves mohini forever ever and ever!!!

পরিশেষ: ফারান স্পট ডেড ছিল। আর মামুন কে দু চার দিন হাসপাতালে রাখা হলে সে সুস্থ হয়ে উঠে। আমি মামুনের স্ত্রী হিসেবে রইলাম। মারোয়া আমার সঙ্গে সঙ্গেই থাকে। আমরা ওই জায়গা ছেড়ে নতুন জায়গায় চলে গিয়েছিলাম। আম্মু আর রিফাত কে এলাকার মানুষরা থাকতে দিচ্ছিল না তাই স্থান পরিবর্তন করল। তারপরও মাঝে মাঝে কেউ যেন কানে ফিস ফিস করে মোহিনী বলে ডাক দিয়ে যায়।
.
(শেষ)
.
কেমন লাগল জানাবেন!!!! আর মোহিনী সিজন ২ ও রয়েছে।। সময় পেলে সেটাও আপলোড করবো।। ধন্যবাদ ♥

মোহিনীWhere stories live. Discover now