মিতাদেবী সুর নরম করে বললেন, "তলিয়ে ভাবো তো, তোমায় এই মুহূর্তে সবচেয়ে কি পীড়া দিচ্ছে? এমন কি কাজ তুমি করেছ যার জন্য তোমার নিজেকে দোষারোপ করতে ইচ্ছা করছে? আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে না, নিজে চিন্তা করো। ভাবতে ভাবতে দেখবে উত্তর তোমার মনের পর্দায় ভেসে উঠবে।"
বুদ্ধিদীপ্ত উত্তরে প্রিয়বাবুর কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে প্রশ্নের প্রচ্ছদ পালটে জিজ্ঞেস করলেন, "ভালো কথা, কাল তোমাদের কনফারেন্স কেমন হল?"
প্রিয়বাবু অনেকটা সহজ হয়েছেন, কফি অর্ডার করেছেন। কাঁচের জানলা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে বললেন, "কেমন আর হবে! সেই এক কথা--প্রফিট কমে যাচ্ছে, খরচা বেড়ে যাচ্ছে, অতএব আমি দোষী। অদ্ভুত সব যুক্তি। খবর পাচ্ছি বাইরে থেকে নাকি এক টিম এসেছে, তারা আজ আমাদের যোগ্যতা মাপবে।"
মিতাদেবী লাফিয়ে উঠলেন, "এখানেই তোমার সমস্যার শিকড়। তোমার মনে হচ্ছে তোমায় অবনমিত করা হচ্ছে, অপদস্থ করা হচ্ছে, তার থেকে তোমার বিদ্বেষ তৈরি হয়েছে, তারই বহিঃপ্রকাশ কাল রাতে ঘটেছে।"
বৌ-এর কথায় সায় দিয়ে বললেন, "হতে পারে, হয়তো ঠিকই বলছ। ধন্যবাদ। সত্যি তুমি যে ভাবে ভাবতে পারো, আমি পারি না।"
মিতাদেবী আদুরে সুরে বকুনি দিয়ে বললেন, "ধন্যবাদ আবার কি! আমি তো বুঝতে পারি না তোমার এত চিন্তার আছে কি? মন সায় না দিলে চাকরি ছেড়ে দাও। কিছুদিনের জন্য বিশ্রাম নাও, নিজে লেখালেখি করো। জীবন আনন্দ করে কাটাও, নিজেকে লাশের মতো টেনে নিয়ে যেও না।"
প্রিয়বাবুর কফি এসে গিয়েছে। প্রথম চুমুকেই বাজিমাত। এখন আর একা লাগছে না, পরিবার পাশে আছে। তাঁর ভেবে ভালো লাগছে যে, যতবার তিনি গাড্ডায় পড়েছেন, মিতাদেবী সবসময় হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফোন স্পিকারে দিয়ে রিল্যাক্স করে বসে বললেন, "ঠিক বলেছ, দরকার হলে কলকাতায় ফিরে চাকরি ছেড়ে দেব। রোজ রোজ এসব ভালো লাগে না। কাল তোমাদের পার্টী কেমন হল?"
"ভালো, তবে শরীরে আর পেরে ওঠে না। মিঠুকে ভেবেছি বলে দেব, এবার থেকে বাইরে ব্যবস্থা করতে।"
KAMU SEDANG MEMBACA
সাপলুডো
Fiksi UmumAmbitions and dreams vis-a-vis reality and corporate politics.