Chapter - 1 | Part - 4

39 4 0
                                    


ক্লাবের ভিতরে ঢুকতেই সাদর সম্ভাষণ। একে একে সবাই এসে প্রিয়বাবুর সাথে সাক্ষাৎ করে গেল। তাদের অনেকের সাথে বিকাশের পরিচয় করিয়ে দিলেন। এবার ড্রিঙ্কের পালা, অর্ডার করতেই পানীয় আর স্ন্যাক্সে টেবিল ভরে গেল। বিকাশ আগে দু-একবার ড্রিঙ্ক করেছে, কিন্তু এখানকার পরিবেশ একেবারে অন্যরকম। জলের মতো লোকে মদ খাচ্ছে লক্ষ্য করে বিকাশ শুরুতেই ডিফেন্সিভ হয়ে গিয়েছে। কানের কাছে অরুণদার সাবধানবাণী না-চাইলেও ভাঙা রেকর্ডের মতো ঘ্যানঘ্যান করে একটানা বেজে চলেছে। অন্যদিকে প্রিয়বাবু তার উদ্দেশ্যে যে 'রেড কার্পেট' পেতে দিয়েছেন, মন তাকে কিছুতেই অস্বীকার করতে পারছে না, আবার সাড়ম্বরে পা ফেলতে গেলেই কে যেন পিছন থেকে টেনে ধরছে। আমন্ত্রণ আর আক্রমণ, দুই একসাথে।

প্রিয়বাবু ঠিক বলেছিলেন--একদিনের জন্য যথেষ্ট হয়ে গিয়েছে। এইসব অবান্তর ভাবনা চিন্তার জালে অযথা জড়িয়ে পড়তে চায় না বিকাশ। সন্ধ্যাটা আনন্দে কাটানো এখন প্রধান উদ্দেশ্য। টেবিলে সবারই প্রথম রাউন্ড শেষ। শুধু বিকাশ পিছিয়ে পড়েছে। প্রিয়দার 'গুড বুকে' থাকতে হলে সবেতেই এগিয়ে থাকতে হবে, তাই এক চুমুকে শেষ করে গ্লাস টেবিলে নামিয়ে রাখল। প্রিয়বাবু সগর্বে বললেন, "সাবাস।" মুখ বিকাশের কানের কাছে নিয়ে তাকে সচেতন করে দেবার জন্য বললেন, "টেক ইউর টাইম, নো হারি।"

ছ-জনের টেবিল। একপাশে বিকাশ, প্রিয়বাবু আর রমেন দাশ, প্রভাবশালী সরকারি আমলা। অন্যদিকে ইংরেজি দৈনিকের সম্পাদক, অনাদি মুখার্জী, আর দুই পুলিশ কর্তা। বয়সে সব থেকে বড়ো না হলেও খাতির প্রিয়বাবুর সবচেয়ে বেশী। দ্বিতীয় রাউন্ড শেষ হতেই আড্ডার চেহারায় নূতন চমক আনলেন এক অতি সুন্দরী চটকদার মহিলা। প্রিয়দার চেয়ারের পিছন থেকে এসে তাঁর চোখ দুটো চেপে ধরলেন দু-হাতের মসৃণ আঙুল দিয়ে, নিমেষে সবার দৃষ্টি কেড়ে নিলেন।

অবলীলায় শরীর দুলিয়ে সুর করে প্রিয়বাবুর উদ্দেশ্যে বললেন, "বল তো কে?"

প্রিয়বাবু এতটুকু নার্ভাস না হয়ে উত্তর করলেন, "একটু কাছে এসো, তবে তো বলতে পারব।"

সাপলুডোWhere stories live. Discover now