পাওয়া আর হারানো

1.2K 30 0
                                    

মিতুর নিজের কাছেই কেমন যেন লাগছিলো । ও যখন আলুর চিপস ভাজা নিয়ে সুমনের সামনে রাখলো তখন একটু লজ্জাই লাগছিলো নিজের কাছে । সুমন নিমের মনেই বই পড়ছিলো । প্লেট টা ওর পাশে রাখার পর ওর দিকে ফিরে তাকালো । তারপর বলল

-আমার জন্য ?

মিতু একটু অপ্রস্তুত বোধ করলো । তবে সামলে নিয়ে বলল

-সবার জন্য । রিতুও খাবে !

ওরা দুজনেই তাকিয়ে দেখে রিতু ওদের থেকে একটু দুরে মিনির পেছনে ছুটে বেড়াচ্ছে । মিনি সুমনের পোষা বেড়ালের নাম ! সাদা রংয়ের ছোট্ট একটা বিড়াল । সুমনের আরেকটা কালো রংয়ের বিড়াল আছে । ওটার নাম টিনি । কিন্তু ওটা সব সময় ঘুমিয়েই থাকে । আর রিতু মিনিকেই বেশি পছন্দ করে । তাই ওকে নিয়ে সব সময় দৌড়াদৌড়ি করে ।

ছোট ছেলে-মেয়েদের বেড়ালের পেছনে দৌড়ানো কখন বাবা মাই পছন্দ করে না । বিশেষ করে মধ্যবিত্ত বাবা মায়েরা তো নয়ই তবে রিতুর বেলায় কিছু বলতে পারে না । মেয়েটার কোন ইচ্ছেতেই ওদের কারো কোন আপত্তি থাকে না । এর পেছনে একটা বড় কারন আছে অবশ্য !

রিতুর হার্টের ভেতরে খুব বড় রকমে একটা সমস্যা আছে । দিন দিন ওর হৃদপিন্ডটা বড় হয়ে যাচ্ছে । ওকে যে খুব বেশি দিন আর বাচিয়ে রাখা সম্ভব হবে না এটা ওর বাবা মা খুব ভাল করেই জানে । তাই ওর কোন কিছুতেই ওনারা আর মানা করে না ।

তাই যখন রিতু নিজ থেকে সুমনের ঘরে এসে বিড়াল নিয়ে খেলা করতো সেটাতে ওনারা প্রথমে আপত্তি করলেও পরে যখন সুমন নিজে এসে বলে গেল যে ওর কোন সমস্যা হচ্ছে না বরং রিতু যখন ওর বাসায় যায় তখন ভালই লাগে তখন ওনারা আর আপত্তি করলো না । সুমনও যেদিন থেকে ব্যাপারটা জানতে পেরেছে সেও মেয়েটার জন্য এক অন্য রকম মায়া অনুভব করা শুরু করেছে ।

মিতুরা যে বাসায় ভাড়া থাকে তারই চিলে কোঠায় সুমন থাকে । চিলে কোঠা বলতে একটা বড় রূপ আর সাথে কোন রকমে একটা ঘাট ধরে এমন একটা ছোট ঘর । সাথে রান্না ঘর আর বাধরুম । পাশে পুরো ছাদ খোলা । এই নিয়েই সুমনের সংসার । অবশ্য একা মানুষের জন্য অনেক । ব্যাচেলর হলেও বাড়িওয়ালা এই বাসা ভাড়া দিতে খুব একটা আপত্তি করে নি ।

ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্রWhere stories live. Discover now