আজ গল্প করার রাত

1K 32 4
                                    

হঠাৎ করেই মিতু আবিস্কার করলো বিয়ের পর ওর জীবনটা আগের থেকে আরও সহজ হয়ে গেছে । এখন চাইলেই অনেক কিছু করা যাচ্ছে যা আগে ভাবাও যেত না । আগে যেখানে প্রতিটা কাজে ওকে কথা শুনতে হত এখানে সেখানে কিছুই শুনতে হচ্ছে না । কালকের কথাই ধরা যাক । মিতুদের পরিবারে মেয়েদের সন্ধ্যার পরে একা একা বাইরে থাকা মানে হচ্ছে মারাত্বক অন্যায় করে ফেলা । সেখানে গতকাল বাসায় আসতে আসতে আসতে রাত আট টা বেজে গেল । ওর বাবা ওকে বকতে যাবে তখনই ওর মুখ দিয়ে বের হয়ে এল যে মাহমুদকে বলে গিয়েছিলো ।

মাহমুদের কথা শুনে মিতুর আব্বা চুপ করে গেলেন । যদিও খানিকটা মিথ্যা কথা । মিতু ঐ লোকটাকে ফোন দেয়ই না বললে চলে । মাহমুদই মাঝে মাঝে ওকে ফোন দেয় । কেমন আছো কি করছো টাইপের কয়েকটা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে তারপর রেখে দেয় । এর বেশি কিছু না ।

মিতুর বিয়েটা মিতুর পছন্দ মত হয় নি । অবশ্য মিতু আগে থেকেই জানতো ওর কপালে হয়তো এমনই হবে । ওর বড় দুই বোনের মত মিতুর গায়ের রং ওতোটা ফর্সা নয় । এই জন্য মিতুর বাবা মায়ের চিন্তার শেষ ছিল না । এই মেয়েকে তারা কিভাবে বিয়ে দিবে ? কে করবে বিয়ে !

কয়েক জায়গা থেকে বিয়ে এসেছে মিতুর । তবে তারা সবাই মিতুকে বিয়ের করার জন্য মোটা টাকা যৌতুক চেয়েছে । দিতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত বিয়ে আর হয় নি । মিতু জানতো এমনই হবে ওর সাথে । ওর বড় দুই বোনের স্বামীদের কাছে ওর জামাই কিছুই না । সামান্য বেতনের একটা চাকরি করে । যেখানে ওর দুই দুলাভাইয়ের একজন সরকারি ব্যাংকে অন্য জন্য বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করে । কি সুখেই না আছে । আর এদিকে এখনও বাপের বাসাতেই পরে আছে । ওর বিয়ে হলেও মাহমুদ কিছুটা দিন সময় নিয়েছে বউ তুলে নেওয়ার ব্যাপারে । বলেছে একটু গুছিয়ে নিয়েই ওকে তুলে নিবে । আর এই ফাকে ওর পড়াশুনাটাও শেষ হবে ।

সব দিক দিয়ে মিতুর বাবা রাজি হয়ে গিয়েছিলো । তিনি জানতেন তার এই মেয়ের গায়ের রংয়ের জন্য স হজে ভাল জায়গাতে বিয়ে হবে । আর মাহমুদ ছেলে হিসাবে ভাল । হ্যা এখানে যে চাকরি করে সেটা আহমরি কিছু না তবে সামনে গিয়ে আরও ভাল কিছু করে ফেলবে ! তারপর থেকেই এভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলো ওর জীবন । আগের মত আর শাসনে রাখতো ওকে ! মিতুর বাবা খুবই কড়া স্বভাবের মানুষ । বাবাকে ওরা তিনবোনই খুব ভয় পেত ।

ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্রWhere stories live. Discover now