বাঁশের লাঠিটাতে একটু ভর দিয়ে আমি পেছন ফিরে তাকালাম । তাকিয়ে দেখি মিতুও বাঁশের লাঠিতে ভয় দিয়ে দাড়িয়ে দম নিচ্ছে । এই বিকেলের নিরুত্তাপ রোদেও ওর নাকে বিন্দু বিন্দু ঘাম । আমি কিছুটা সময় দাড়িয়ে থেকেই ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম । এই পরিশ্রমের ভেতরেও মিতুকে দেখতে অন্য রকম লাগছে । প্রতিবারের মতই নতুন !
অবশ্য মিতুর এই সাজটা আমি এর আগে কোন দিন দেখি নি । মিতু কখনই জিন্স পরে না । কিন্তু এই বান্দরবান ট্যাুরের জন্য আজকে ও জিন্স পরে এসেছে । পাহাড়ে ওঠার জন্য শাড়ি কিংবা সেলোয়ার কামিজ থেকে জিন্স ও মানান সই । ওকে এতো দিনের কখনই আমি লং কামিজ ছাড়া আর কিছু পরতে দেখ নি সেখানে আজকে শর্ট কামিজও পরেছে কেবলই এই ট্যুরের জন্য । লম্বা চুলটা ও খোঁপা করতেই বেশি পছন্দ করে কিন্তু আজকে ঝুটির মত করে শক্ত করে বেঁধে রেখেছে পিছনে । কাধে ব্যাগ প্যাক । যদিও ওকে ব্যাগ দিতে চাইছিলাম না, ও জোর করে নিয়েছে । বলেছে সে কঁচি খুকি না । নিজের জিনিস নিজে বহন করতে সে পারবে ।
আমাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে মিতু কাছে এসে বলল
-কি ব্যাপার এই টুকুতেই হাফ লেগে গেল ?
আমি খানিকটা হেসে বললাম
-হুম ! অভ্যেস নেই তো !
আমার কথা শুনে মিতু হাসলো । তারপর বলল
-হয়েছে । আসো !
আমি ওর পেছন পেছন হাটতে লাগলাম । সবার সামনে আমাদের গাইড সাং চাকমা । তারপর আমরা । আমাদের পেছনে আর কেউ নেই । এখন বান্দরবানে অফ সিজন চলছে । ট্যুরিস্ট নেই বললেই চলে । যা আছে সবাই নীলগিরি কিংবা নীলাচলের দিকে । এই বগা লেকের দিকে আসার মানুষ নেই একদম ! আমি নিজেও ঠিক বুঝতে পারলাম না মিতু হঠাৎ করে এখানে আসতে চাইলো কেন । চাইলো মানে একেবারে আসবেই । অন্য কোন কথা শুনবে না ! এবং তাকে আনতেই হবে !
আমি ভেবেছিলাম মিতুর হয়তো এই পরিশ্রম সহ্য হবে না । পাহারে ওঠাটা মুখের কথা না । আমি ছাত্র থাকা অবস্থায় এখানে এসেছিলাম । সেবার যে পরিশ্রম হয়েছিলো সেই কথা আমার সারাজীবন মনে থাকবে । তাই মিতু যখন আসতে চাইলো আমি ওকে সাফ মানা করে দিলাম । বললাম অন্য যে কোন জায়গাতে নিয়ে যাচ্ছি কিন্তু বগালেকে না । কিন্তু মিতু আসবেই এবং এখানেই আসবে ।
YOU ARE READING
ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্র
Romanceআমি সব সময় ভালবাসার গল্প লিখতেই পছন্দ করি । ছোট ছোট এক দুই দৃশ্যের গল্প গুলো পড়তে এবং লিখতে খুবই ভাল লাগে । এইখানে তেমন গল্প গুলোই পোস্ট হবে । প্রত্যেক পর্বে আসবে নতুন নতুন গল্প । ছোট ছোট ভালবাসার গল্প । যখনই লিখবো তখনই পোস্ট করা হবে ! ছোট ছোট গল্প...