প্রিয় অশ্রু

1.4K 39 3
                                    

যখন বাড়িওয়ালা নিজে আমার ঘরে এসে হাজির হল তখন আমি খানিকটা চিন্তিত বোধ করলাম । ওনার মুখ দেখেই মনে হচ্ছিলো যে উনি কিছু একটা নিয়ে চিন্তিত এবং সেটা যে আমার সাথে সম্পর্কিত সেটাও আমি বুঝতে পারছিলাম খুব ভাল ভাবেই । আমার দিকে চিন্তিত ভাবে তাকিয়ে রইলেন কিছুটা সময় । আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না যে কি এমন কাজ করে ফেললাম আমি যে আমার কাছে এভাবে আসা দরকার পরে গেল । তবে ওনার চেহারা দেখে আমার কেবল মনে হল যে কথাটা উনি বলতে এসেছেন সেটা বলতে উনি খানিকটা দ্বিধা বোধ করছেন । আমি তাকে বললাম

-আপনাকে চিন্তিত মনে হচ্ছে ? কিছু বলার ছিল ?

উনি মাথা ঝাকালেন । কিছু বলার আছে । কিন্তু সেটা ঠিক বলতে পারছেন না কোন কারনে । আমি বললাম

-কোন সমস্যা নেই । বলে ফেলেন !

-কিভাবে যে বলি ?

-বলুন ! আপনি আমার বাবার বয়সী । কোন সমস্যা নেই বলুন !

বাড়িওয়ালা আঙ্কেল আরও একটু সময় চুপ করে থেকে বলল

-গতকাল সন্ধ্যা বেলা কি তুমি কোন মেয়ের সাথে ঘুরে বেরিয়েছিলে ?

আমি খানিকটা অবাক হলাম । আঙ্কেলের এমন প্রশ্ন করার কথা না মোটেও । আমি বললাম

-বাইরে বলতে, এখানেই ছিলাম । মোড়ের ফুচকার দোকানটা আছে, ওখানে !

-আসলে তোমার এটা নিজেস্ব ব্যাপার । তবুও জানতে চাইছি । মেয়েটা কে বাবা ?

-আমার ফ্রেন্ড ! আমরা একই সাথে পড়াশুনা করি । আর ওর বাসাও এই যে এই গলির মাথায় ! ওর সাথে তো প্রায়ই দেখা হয় বিশেষ করে ছুটির দিনে যেদিন আমার টিউশনী থাকে না সেদিন ওর সাথে সন্ধ্যার সময় গল্প গুজব করি । আমার আরও বন্ধুরা আসে । কেন হঠাৎ এই কথা ?

আমার এই প্রশ্ন শুনে তিনি আরও একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলেন !

দুই

সুপ্তিদের বাসার এই চিলেকোঠায় আমি উঠে এসেছি খুব বেশিদিন হয় নি । খানিকটা অদ্ভুদ ভাবেই । তবে এই ওঠার ভেতরে সুপ্তির যে প্রত্যক্ষ হাত ছিল সেটা আমি জানি । আমি এটা ভাল ভাবে টেরও পাই । মানুষ ভালবাসার অনুভুতি গুলো খুব ভাল করেই টের পায় । আমিও পাই । বিশেষ করে সুপ্তির চোখের দিকে তাকালেই সেটা আমি বুঝতে পারি । আমারও যে ইচ্ছে করে না সেটা আমি বলব না তবে নিজের অবস্থান আমি খুব পরিস্কার ভাবেই জানি । মা বাবা ছাড়া একটা এতিম ছেলের জন্য চাঁদের দিকে হাত বাড়ানোটা মানায় না ।

ভালবাসার অনু-গল্প সমগ্রWhere stories live. Discover now